শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পাকিস্তানের ডাকটিকিট প্রকাশ নিয়ে ক্ষুব্ধ ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৬:১৪ পিএম

পাকিস্তানের ডাক বিভাগ সম্প্রতি ‘ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে নির্যাতন’ শিরোনামে ২০টি টিকেটের একটি সেট প্রকাশ করেছে। এর ফলে পাক-ভারত সম্পর্কে তিক্ততা আরো বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাক-ভারত বৈঠক বাতিল করার সিদ্ধান্তের পেছনে এটিও একটি কারণ হিসেবে কাজ করেছে। এটি নিয়ে রবিবার জাতিসংঘ সম্মেলনেও সমালোচনা করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা।

একেকটি টিকেটে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্যাতনের ওপর প্রকাশিত বিভিন্ন ঘটনার ছবি রয়েছে। যেমন, কথিত রাসায়নিক অস্ত্রের শিকার মানুষের ছবি, ছররা বন্দুকের গুলিতে আহত মানুষের ছবি রয়েছে, পুলিশ এনকাউন্টারের ছবি রয়েছে।
একটি ডাকটিকেটে ২০১৬ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত জনপ্রিয় কাশ্মীরি জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানির ছবি রয়েছে। তাকে বর্ণনা করা হয়েছে ‘মুক্তির প্রতীক’ হিসাবে। বুরহান ওয়ানির হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখনও ভারত-শাসিত কাশ্মীরে অসন্তোষ চলছে।
ফারুক আহমেদ দার নামে যে কাশ্মীরী যুবককে ভারতের সেনাবাহিনীর একটি জীপের সামনের বাম্পারে বেঁধে গাড়ি চালানো হয়েছিল, সেই ছবিও রয়েছে একটি ডাকটিকেটে। প্রতিটি টিকেটের বাঁদিকে উর্দুতে একটি বাক্য লেখা রয়েছে, ‘কাশ্মীর একদিন পাকিস্তান হবে।’
এর আগে ১৯৬০ সালে পাকিস্তান আরেকবার কাশ্মীর নিয়ে স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করেছিল। সেখানে পাকিস্তানের মানচিত্রের মধ্যে কাশ্মীরকে দেখানো হলেও ভিন্ন রঙ দেওয়া হয়েছিল। টিকেটে লেখার সুরও ছিল অপেক্ষাকৃত অনেক নরম, ‘জম্মু ও কাশ্মীর; চূড়ান্ত ভবিষ্যৎ এখনও অনির্ধারিত।’
এ বিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসীরা চার পুলিশকে হত্যা এবং সন্ত্রাসীদের সুনাম করে ডাকটিকিট প্রকাশের মাধ্যমে পাকিস্তান প্রমাণ করেছে যে তারা তাদের পথ থেকে সরে যাবে না।’

জবাবে পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়: ‘সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভারত কখনো যেমন কাশ্মিরী জনগণের বিরুদ্ধে তার নৃশংস অপরাধকে লুকাতে পারবে না তেমনি কাম্মিরীদের আত্ম-নিয়ন্ত্রনাধিকারের ন্যায্য আন্দোলনকে অস্বীকার করতে পারবে না।’
পাকিস্তান ডাক বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে বিবিসিকে বলেন, “যে কেউই স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশের প্রস্তাব করতে পারেন। প্রস্তাব ডাক বিভাগের অনুমোদন পেলে তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে। ডাকটিকেটের বিষয়ের সাথে যদি বৈদেশিক সম্পর্কের কোনো সম্পর্ক থাকে, তাহলে তা পাঠানো হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয় প্রধানমন্ত্রীর অফিস।”
এই ডাকটিকেট প্রকাশিত হয় ২৪শে জুলাই, পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের একদিন আগে। অর্থাৎ ইমরান খানের ক্ষমতা গ্রহণের ২৫ দিন আগে। পর্যবেক্ষকদের তাই ধারণা ভারতের সাথে সম্পর্কে কট্টর মতবাদ পোষণ করেন, সরকারের ভেতর এমন কিছু ব্যক্তির সিদ্ধান্তেই এই ডাকটিকেট প্রকাশিত হয়েছে।
পাকিস্তানে ডাক টিকেট সংগ্রহকারীরা বলছেন, কাশ্মীরের ওপর স্মারক এই ডাকটিকেট বিদেশে ভালো বিক্রি হচ্ছে। বিশটির এক সেট বিক্রি হচ্ছে ছয় মার্কিন ডলারে।
ইসলামাবাদে একজন ডাক কর্মকর্তা জানান, গত কদিনে তিনি শ তিনেক সেট বিক্রি করেছেন। এক সেটের দাম ১.৩০ মার্কিন ডলার। মাত্র ২০,০০০ সেট ছাপা হয়েছে। প্রায় সবই বিক্রি হয়ে গেছে। বিশেষ করে এ নিয়ে বিতর্কের খবর প্রকাশের পর চাহিদা বেড়ে যায়। সূত্র: বিবিসি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন