মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ইহুদি উপাসনালয়ে এক শিশুর নামকরণ অনুষ্ঠানে এক বন্দুকধারীর গুলিতে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। খবর ওয়াশিংটন পোষ্ট।
পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের পিটসবার্গের একটি সিনাগগে (ইহুদিদের উপাসনালয়) স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই বন্দুক হামলার ঘটনা। আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদ সংস্থা ‘সিএনএন’ জানায়, পিটসবার্গের স্কুইরেল হিল এলকার ট্রি অব লাইফ কংগ্রেগেশন সিনাগগে হামলার চালানোর সময় ৪৬ বছর বয়সী এই ব্যক্তির হাতে ছিল এআর-১৫ স্টাইল রাইফেল। তার নাম রবার্ট বোয়ারস।
রবার্ট বোয়ার্স হুট করেই সিনগগ উপসানলয়ের দরজা খুলে মেইন ফ্লোরে ঢুকে পড়েন। সেখানে থাকা ৪০ থেকে ৫০ জনের ওপর তিনি এলাপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। মেইন ফ্লোরে ৩ জনকে হত্যা করার পর তিনি সিঁড়ি বেয়ে নিচের দিকে যান। এখানেও তিনি এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে ৪ জনকে হত্যা করেন।
হামলাকারী শ্বেতাঙ্গ রবার্ট পালিয়ে যেতে সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলায় ওঠেন। কিন্তু এখানে তার সঙ্গে দেশটির স্পেশাল উইপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস টিমের বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে এই বন্দুকধারী এবং তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। আহতাবস্থায় তাকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আহত হওয়া তিন পুলিশ কর্মকর্তার একজনের হাতে গুলি লাগে। অন্য দুজনের অবস্থা সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। গুলি করার সময় ‘এসব ইহুদি অবশ্যই মরবে’ বলে ইহুদিবিদ্বেষী বোয়ারস চিৎকার করছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
শনিবার সকালে রবার্ট বোয়ার্স নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া পোস্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি অভিবাসীদের আগমনে আমি ক্ষিপ্ত। আমি ভেতরে যাচ্ছি।
মার্কিন নাগরিকেরা ইহুদিদের ওপর এমন ভয়াবহ হামলা নিয়ে নিন্দার ঝড় তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন যে, শুটিংটি ছিল ‘ভয়ানক, অত্যন্ত ভয়ানক ঘটনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটাকে একটা এন্টি সিমাটিক অপরাধ বলে মনে হচ্ছে। আমরা ঘটনার ব্যাপারে আরও জানতে চেষ্টা করছি। নিশ্চিতভাবে এটা একটা এন্টি-সিমাটিক ঘটনাই মনে হচ্ছে। এটা এমন এক ঘটনা যা আপনার বিশ্বাস ই হবেনা। এটা চিন্তার চেয়েও ভয়াবহ একটা ঘটনা।’
স্থানীয় গভর্নর টম ওলফ বন্দুক আইন নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়ে দেয়া এক বিবৃতিতে গোলাগুলির ঘটনাকে একটি ‘চরম শোকাবহ ব্যাপার’ হিসাবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আর কোন মৃত্যুর ঘটনা যেন ঘটে সেজন্য আমাদের সকলের প্রার্থণা করা উচিৎ। এটা আমাদের জন্যে এতগুলি মৃত্যুর ঘটনা খুব দীর্ঘসময়ের জন্যে দুঃসংবাদ। বিপজ্জনক অস্ত্র আমাদের নাগরিকদের জীবন ক্ষতিকর অবস্থার মধ্যে ফেলেছে।’
ইহুদিবাদী ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামলার ‘হৃদয়বিদারক’ ঘটনায় ‘হতভম্ভ’ হয়ে জানায়, ‘আক্রান্ত লোক ও তাদের পরিবারদের জন্য পুরো ইজরায়েলবাসী শোকার্ত। আমরা পিটসবুর্গের ইহুদি সম্প্রদায়ের পাশে রয়েছি। এমন ভয়ংকর এন্টি-সিমাটিক নিষ্ঠুরতার শিকার আমেরিকানদের পাশে রয়েছি আমরা। আহতদের দ্রুত আরোগ্যলাভের জন্য আমরা প্রার্থনা করছি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন