যানবাহনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে সম্প্রতি জ্বালানির উপর করের হার বাডিয়েছে ফ্রান্সের সরকার৷ রোববার তার প্রতিবাদে প্যারিস থেকে শুরু করে দেশের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল আন্দোলন। হলুদ জ্যাকেট আর পোশাকে প্রায় তিন লাখ লোক এসে জড়ো হয়েছিল রাস্তায়-রাস্তায়। তাদের গায়ে ছিল ‘ইয়েলো ভেস্ট’ ও হাতে আন্দোলনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ম্যাঁখো গদি ছাড়ো’।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় দুই হাজার স্থানে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বেশির ভাগ আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও, কয়েক জায়গা মিলিয়ে চারশ’র বেশি আহত হন, যার মধ্যে ১৪ জনের অবস্থা গুরুতর৷ পূর্ব স্যাভয় অঞ্চলে একজন নিহত হয়েছেন।। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই সময় দক্ষিণ-পূর্বের এক শহরে অসুস্থ মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় এক নারীর গাড়ি ঘিরে ধরেন বিক্ষোভকারীরা৷ তারা গাড়ির উপর উঠে লাফাতে থাকলে ঐ নারী ভয় পেয়ে যান৷ এই অবস্থায় তিনি গতি বাড়িয়ে জনতার উপর গাড়ি তুলে দেন৷ ফলে ৬৩ বছরের এক নারী প্রাণ হারান৷ রোববার ঐ নারী চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ তারপর তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়া হয়৷
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাস্টানের জানান, প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিক্ষোভকারী শনিবার সারারাত বিক্ষোভ করেন৷ সেদিন প্রায় দেড়শ' জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলেও জানান তিনি৷ এরপর রবিবার প্রায় ৪৬ হাজার বিক্ষোভকারী প্রতিবাদে অংশ নেন৷ সোমবারও বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়৷
এদিকে, রবিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এডুয়া ফিলিপ জানিয়েছেন, জ্বালানির উপর কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসবে না৷ তবে বিক্ষোভের আভাস পেয়ে প্রেসিডেন্ট ম্যাঁখো গত সপ্তাহে বলেছিলেন, পুরনো জ্বালানি বেশি ব্যবহৃত হয় এমন গাড়ি পরিবর্তন করতে সরকার প্রত্যেক দরিদ্র পরিবারকে চার হাজার ইউরো করে অনুদান দেবে৷
উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনতে ম্যাখো বিভিন্ন আর্থিক সংস্কার করে যাচ্ছেন৷ তবে এতে তার জনপ্রিয়তা দিন দিন কমছে৷ ৯ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১,৯৫৭ জনের উপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ম্যাঁখোর জনপ্রিয়তা চার পয়েন্ট কমে ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ এছাড়া আরেক জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৬২ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাদের কাছে দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানি যুগে প্রবেশের চেয়ে ক্রয়ক্ষমতা বাড়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ সূত্র: এএফপি, এপি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন