উত্তর : চাকরির জন্য দীর্ঘ দিন বিদেশে থাকলে বিবাহিত ব্যক্তির কষ্ট হওয়াই স্বাভাবিক। অবিবাহিতদের জন্য এর প্রতিকার হচ্ছে চিন্তাভাবনা পবিত্র রাখা, ধর্মীয় আবহে অবস্থান ও অধিক রোজা রাখা। বিবহিতদের জন্যও একই ব্যবস্থা। তবে, আপনি যে কথা জানতে চেয়েছেন, তার প্রেক্ষিতে বলতে হয়, ভিডিও চ্যাটিং ইত্যাদির মাধ্যমে নিজ স্ত্রীর সাথে কোনোরকম যৌন আচরণ করা শরিয়তে হারাম নয়। তবে, যৌনতার উদ্দেশ্য যেহেতু সন্তানাদিকে পৃথিবীতে আনা, এসব দ্বারা তো এ উদ্দেশ্য পূরণের কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই এখানকার আচরণে শরিয়ত পূর্ণ সমর্থন দেয় না। তবে, এতে ভিন্ন নারী-পুরুষের মধ্যকার কঠিন গুনাহের মতো গুনাহ হবে না। বেঁচে থাকা ভালো, অগত্যা যদি নিজেদের উভয়ের মানসিক প্রশান্তির জন্য বিশেষ করে অন্য কোনো গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য এসব করা হয়ে থাকে, তাহলে শরিয়ত কিছুটা শিথিলতা দেখাতে পারে। এ ব্যাপারে হাদিসেও ইশারা পাওয়া যায়। তবে, স্বামী-স্ত্রী ছাড়া পরনারী-পুরুষের বেলায় এসব সম্পূর্ণ হারাম। কারণ, শুধু কল্পনা করে কোনো যৌন আচরণ করলেও গুনাহ হয়। বেগানা নারী ইচ্ছাকৃতভাবে দেখলে চোখের জিনা হয়। স্পর্শ করলে হাতের জিনা হয়। ভাবলে মনের জিনা হয়। সে দিকে অগ্রসর হলে পায়ের জিনা হয়। এসব কথা বললে বা শুনলে মুখ ও কানের জিনা হয়। জিনা মানে জিনার মতো গুনাহ হয়। তা হলে আপনার প্রশ্নের জবাব এ নীতিমালা থেকেই নিয়ে নিন। ঠিক জিনার সমান শাস্তি না হলেও গুনাহ সমান হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘লা তাকরাবুজ জিনা, ইন্নাহু কানা ফাহিশাতাও ওয়া ছাআ ছাবিলা’। অর্থাৎ তোমরা জিনার ধারে কাছেও যেও না। নিঃসন্দেহে ইহা অশ্লীলতা ও খুবই মন্দ পথ (আল কুরআন)। এখানে ধারে কাছেও যেও না থেকে কী বোঝা যায়? যেসব কাজ বা আচরণ জিনার কাছাকাছি, প্রেরণাদাতা বা পরিণামে জিনার দিকে নিয়ে যায়, সবই হারাম বা জিনার অনুসঙ্গ। অতএব, মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য যেমন মৃত্যুর কারণগুলো থেকে বাঁচতে হয়, তেমনই জিনা থেকে বাঁচতে হলে জিনার কারণসমূহ থেকে বাঁচতে হবে।
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতাওয়া বিশ্বকোষ।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন