ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী আবহে সবকিছু যদি ঠিকঠাক পরিকল্পনা মতো ঘটে তাহলে আগামী বছর ২০ জানুয়ারি রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রার্থী ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য অপার সুখবর বয়ে আনবে। ওইদিন তিনি সম্ভবত সেই জায়গাটিতে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবেন যেখানে এর আগে দাঁড়িয়েছিলেন আমেরিকার দুজন বিখ্যাত প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এবং জন এফ কেনেডি। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে বিজয় অর্জন সম্ভব হলে ৭০ বছর বয়স্ক ট্রাম্প তখন তার এক হাত, বিশেষ করে ডান হাত সামনের দিকে উত্তোলন করে দাঁড়াবেন এবং বাম হাত স্থাপন করবেন পবিত্র বাইবেলের ওপর। সেই বাইবেলটি আবার ধরে রাখবেন প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। এভাবেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সেদিন শপথবাক্য পাঠ শুরু করবেন।
এ ধরনের পবিত্র শপথ অনুষ্ঠানে ইতিপূর্বে আমেরিকার বিখ্যাত প্রেসিডেন্টরা যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন তা দেশটির কয়েকশ বছরের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন সেদিন গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত আমেরিকান জনগণের ঘা সারিয়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিলেন। একইভাবে জন এফ কেনেডি প্রকাশ করেছিলেন তার সেই বিখ্যাত উক্তি : দেশ তোমাকে কী দিল সেই প্রশ্ন না তুলে বরং দেশের জন্য তোমরা কী করতে পার সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হও।
শপথ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর হোয়াইট হাউসে নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দিনটা অতিবাহিত হবে ক্যাপিটাল হিলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিতি এবং উৎসাহী কতগুলো ক্যামেরার সামনে তার সঙ্গে হালকা কথাবার্তা ও হাত মিলিয়ে বিদায় অভিবাদন জানানোর মধ্যদিয়ে। কার্যত হোয়াইট হাউসের প্রথম দিনটা তার এভাবেই কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। দায়িত্ব পালন শুরু করার প্রাথমিক পর্বে ট্রাম্প যে কাজটা করবেন তা হলো বারাক ওবামা হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেওয়া মাত্রই তিনি তার অভিবাসন বিলটা পরিবর্তনে কিংবা বাতিলে দ্রুত হস্তক্ষেপ নেবেন। ওবামা তার প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাহী ক্ষমতাবলে এ ব্যাপারে যে নির্দেশ জারি করেছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অন্তত ৫০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বৈধতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
এই কাজটি শেষ করার পর তিনি সম্ভবত হাত বাড়াবেন অর্থনৈতিক দিকে। প্রথমেই তিনি যে কাজটি করতে পারেন তা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওইদিন প্রথম ওভাল অফিসের ফোন তুলে প্রধানত দুটি ব্যবসায়ী কোম্পানির দুই প্রধান কর্ণধারের সাথে কথা বলবেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ফোর্ড এবং অন্যটি নাবিস্কো। সম্ভবত এই ফোনকলে তিনি ওই দুটি কোম্পানির দুই প্রধান নির্বাহীকে এই বলে হুমকি দেবেন যে তারা যদি আমেরিকার বাইরে কর্মচারীদের নিয়োগ সংখ্যা বাড়ায় তাহলে তাদের উৎপন্ন পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হবে।
এরপর তিনি তার বহুল কথিত মুসলিম প্রতিহত এবং বহিরাগমন ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজে হাত দিতে পারেন। ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় এ দুটি বিষয়ে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন এবং এ জন্য তাকে ব্যাপক সমালোচনারও মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সূত্র : দি টেলিগ্রাফ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন