ঠাণ্ডা মৌসুমে শিশুর ত্বক আর্দ্র রাখার পাশাপাশি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। নব্য বাবা-মা হওয়া কঠিন ব্যাপার। তার উপর এই শীতে শিশুর জন্য বাড়তি যত্ন নিতে গিয়ে অনেকই হিমশিম খান।,তাই ছোট্ট সন্তানের সঠিক যত্ন নিতে বেশ কয়েকটি পন্থা।
লোশন: শিশুর ত্বক পাতলা হওয়ায় তা প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় দ্রুত আর্দ্রতা হারায়। তাই শিশুর জন্য আদর্শ লোশন খুঁজে বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘প্যারাবেনস-ফ্রি ফর্মুলা’ এবং কাঠবাদামের দুধ মিশ্রিত লোশন শিশুর ত্বকের জন্য আদর্শ।
ময়েশ্চারাইজার: শিশুর ত্বক সঠিকভাবে ময়েশ্চারাইজড হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। বিশেষ করে যে অংশগুলো বাইরে থাকে। যেমন- হাত, পা, মুখ।
গোসলের পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। যাতে সারাদিন এসব অঙ্গের ত্বক নরম থাকে। এজন্য ব্যবহার করতে হবে ওমেগা-থ্রি ও ভিটামিন ই যুক্ত ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম। কারণ এই দুই উপাদান ত্বকের গভীরে পৌঁছে সবচাইতে শুষ্ক অংশকেও আর্দ্র রাখে।
ম্যাসাজ অয়েল: শিশুর ত্বকের প্রতিদিনই চাই বিশেষ যত্ন। তাই বিশেষ বেবি অয়েল দিয়ে মালিশ করলে শিশুর ত্বক থাকবে সুরক্ষিত। এজন্য চাই ‘প্যারাবেন্স’ মুক্ত এবং রাইস ব্র্যান অয়েলের মতো পুষ্টিকর উপাদান সমৃদ্ধ।
গরম কাপড়: শিশুর জন্য শীতের কাপড় কেনার সময় ভালোমানের এবং প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি কাপড় দেখে কিনতে হবে। এই কাপড়গুলো হয় নরম এবং আরামদায়ক, ফলে শিশুর ত্বকে র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
শুষ্ক বাতাস: শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা কমে যায়। যা শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যেমন- নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, ঠোঁট ফেটে যাওয়া ইত্যাদি। তাই শিশুর ঘরে একটি ‘হিউমিডিফায়ার’ রাখতে পারলে ভালো হয়। এতে শিশুর ত্বক যেমন ভালো থাকবে, তেমনি শ্বাস নিতেও অসুবিধা হবে না, ঘুমাতে পারবে আরামে।
ভারতের ‘অ্যাপোলো ক্রেইডল’য়ের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান সি. সুরেশ কুমার দিয়েছেন আরও কিছু পরামর্শ।
গোসলের সময় শিশুকে বেশি সাবান মাখানো যেমন উচিত নয় তেমনি মাখানোর পর দীর্ঘক্ষণ ত্বকে রাখাও ঠিক না। কারণ সাবান শুকিয়ে ত্বকে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।
শিশুকে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় ধরে গোসল করানো ঠিক না। বেশি সময় ধরে গোসল করালে ত্বক অতিরিক্ত আর্দ্র হয়ে যায়। ফলে ত্বক দূর্বল হয়ে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
আবার গোসলের সময় শিশুর ত্বকে কোনো কিছু ঘষা উচিত নয়। এতে ত্বকের উপরের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আলতো চাপে ত্বক পরিষ্কার করে দ্রুত গোসল শেষ করতে হবে।
সবুজ শাকসবজি ও তাজা ফল যেমন- আপেল, কলা, কমলা ইত্যাদি শিশুকে দেবে বাড়তি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক।
শীতকালে শিশুকে সবসময় ঘরের মধ্যে উষ্ণ রাখতে হবে। বাইরে নিয়ে গেলে অবশ্যই উলের পোশাক, মোজা ইত্যাদি পরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। শীতের ঠাণ্ডা বাতাসে সরাসরি সংস্পর্শে যাতে শিশুর না আসে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নইলে সর্দি, কাশি এমনকি নিউমোনিয়া হয়ে যেতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন