ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ার আলেপ্পোর দক্ষিণে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে প্রচ- লড়াইয়ের পর কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রামের দখল নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এ লড়াইয়ে ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস গতকাল শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে। আল কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত নুসরা ফ্রন্টসহ অন্য বিদ্রোহী যোদ্ধারা গত বৃহস্পতিবার খান টোম্যান গ্রামে অবস্থানরত সরকারি বাহিনী উপর হামলা চালিয়ে গ্রামটি দখল করে নেয়। গ্রামটি দামেস্ক-আলেপ্পো মহাসড়কের কাছে হাওয়ায় এটি কৌশলগতভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে, তুরস্কের সীমান্তবর্তী সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের একটি শরণার্থী ক্যাম্পে বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো বহু মানুষ। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া নাকি সিরিয়া এ বিমান হামলা চালিয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও থেকে দেখা যায়, শরণার্থী ক্যাম্পের তাঁবুতে আগুন জ্বলছে। হামলায় বিধ্বস্ত ভবনের নিচে আটকা পড়েছেন শরণার্থীরা। আর ঘটনাস্থলে আগুন নেভাতে ব্যস্ত উদ্ধারকর্মীরা। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবারের হামলাটি ছিল বেসামরিক লোকজনের ওপর চালানো সর্বশেষ নৃশংসতা। এর আগে দুই সপ্তাহে সিরিয়ার আলেপ্পা প্রদেশে বিমান হামলা ও গোলাগুলিতে ৩০০ মানুষ নিহত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বুধবার মধ্যরাত থেকে আলেপ্পোতে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। তবে প্রদেশটির অনেক স্থানে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের খবর পাওয়া গেছে। সিরিয়ায় গত পাঁচ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধ চলছে। এ গৃহযুদ্ধে ৪ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
আর এ যুদ্ধের ফলে ইউরোপে শরণার্থী সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়া অথবা সিরিয়ার সরকারি বাহিনী এই বিমান হামলা চালিয়েছে বলে শোনা গেলেও কোনো তথ্যই নিশ্চিত করা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার চাপে আলেপ্পোতে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির এক দিনের মাথায় এই হামলার ঘটনা ঘটল। গত পাঁচ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধে প্রাণ দিতে হয়েছে চার লাখ মানুষকে। কেবল গত দুই সপ্তাহেই আলেপ্পোতে বিমান হামলা ও গোলাগুলিতে অন্তত ৩০০ মানুষ নিহত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে না পারলে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় তৈরি হবে এবং নতুন করে আরও চার লাখ মানুষ বাস্তুহারা হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিংঘ। বিবিসি,রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন