শবরিমালার মন্দিরের ভিতরে দুই মহিলার প্রবেশের ঘটনায় কেরালা জুড়ে চলছে প্রতিবাদ। বৃহস্পতিবার কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয় রাজ্যের অধিকাংশ শহরে। ইতোমধ্যে ৭৫০জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিক্ষোভে সহিংসতার জেরে মৃত্যু হয়েছে একজনের, আহত অসংখ্য। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কেরালা পুলিশ। এর মধ্যেই মন্দিরে প্রবেশ করলেন তৃতীয় মহিলা শ্রীলঙ্কান নাগরিক শশীকলা। বৃহস্পতিবার রাতে মন্দিরে প্রবেশ করেন ছেচল্লিশ বছরের এই মহিলা পূজারিনি। মন্দিরে বিন্দু ও কনকদুর্গার প্রবেশের ঘটনায় জ্বলে উঠেছে রাজ্য। এ বার শশীকলার প্রবেশ সেই বিক্ষোভের আগুনে আরও ঘি ঢালবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
বুধবার ভোরে ৫০ বছরের কম বয়সি দুই মহিলা শবরিমালায় পুজো দেওয়ার পরেই রাজ্য জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। বন্ধ করে রাখা হয় রাস্তা, দোকান, বাজার। আক্রমণ করা হয় সাংবাদিকদের উপর। তখনই আহত হন শবরিমালা কর্ম সমিতির সদস্য, চন্দ্রন উন্নিথান নামের ৫৫ বছরের এক ব্যক্তি। তার মাথায় পাথর ছুড়ে মারার অভিযোগ ওঠে। রাতেই হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। এর পরেই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় পরিস্থিতি রীতিমতো অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শবরিমালা কর্ম সমিতির ডাকা বন্ধ শুরু হয়। সারাদিন কেরালার বিভিন্ন শহরে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। বিজেপির প্রচ্ছন্ন সমর্থনে চলা সংগঠন শবরিমালা কর্ম সমিতি বুধবার শবরিমালার অন্দরে দুই মহিলার প্রবেশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে। রাতারাতি বদলে যায় পরিস্থিতি। প্রথমে শবরিমালার সামনে, তারপর বিভিন্ন শহর জুড়ে চলে বাইক বাহিনীর দাপট। নিমেষে যা রাজনৈতি সংঘর্ষের রূপ নেয়। কারণ, একদিকে এই বন্ধকে সমর্থন করছে বিজেপি, অন্যদিকে কংগ্রেস দিন টিকে ব্ল্যাক ডে বলে মন্তব্য করে। এর ফলে দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীরাই লড়াইয়ে নামে। বাইক বাহিনীর দাপটে প্রায় তিরিশ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। যদিও রাজ্যবাসীকে ভয় পেতে মানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
কী ভাবে ওই দুই ভক্ত মন্দিরের পিছন দরজা দিয়ে ঢুকল তার তদন্তের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ ভি মুরলীধরন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠি লিখেছেন। যদিও কেরালার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিয়ে ওই দুই মহিলাকে মন্দিরে ঢোকানো হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন