বয়সের কারণে শ্রবণশক্তি হারাতে থাকলে বিষণ্নতায় ভোগার ঝুঁকি বাড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকদের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বার্ধক্যজনীত শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়া ব্যক্তিদের আশঙ্কাজনক মাত্রায় হতাশাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা স্বাভাবিক শ্রবণশক্তির প্রবীণদের তুলনায় দ্বিগুন।।
শ্রবণশক্তি কমার মাত্রা যদি তীব্র হয় তবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ার এই আশঙ্কা বাড়তে পারে চারগুন পর্যন্ত।
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক জাস্টিন এস. গোলাব বলেন, “এর কারণ হল যাদের শ্রবণশক্তি কমে যায় তাদের অন্য মানুষের সঙ্গে আলাপ করতে সমস্যা দেখা দেয়, ফলে সামাজিকভাবে একা হয়ে পড়েন। সেখান থেকে আসে হতাশা।”
‘জেএএমএ অটোল্যারিঙ্গোলজি-হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি’ নামক জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
শ্রবণশক্তি হ্রাসের চিকিৎসা হতে পারে শেষ বয়সে হতাশাগ্রস্ততা কাটানোর একটি কার্যকর উপায়। তবে প্রবীণদের ক্ষেত্রে প্রায়ই এই রোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না কিংবা পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হয় না।
গবেষণার প্রধান লেখক জাস্টিন এস. গোলাব বলেন, “শ্রবণশক্তির হ্রাস পাওয়া নির্ণয় করা এবং চিকিৎসা খুবই সহজ। ৭০’য়ের উপর যাদের বয়স, তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই সামান্য পরিমাণে হলেও শ্রবণশক্তি লোপ পায়। তবে এদের মধ্যে খুব সংখ্যক মানুষেরই রোগ নির্ণয় করা হয়। আর চিকিৎসার আওতায় আসেন আরও কম সংখ্যক মানুষ, যা একেবারেই অনুচিত।”
“আর এই রোগের চিকিৎসার মাধ্যমে যদি হতাশাগ্রস্ততা দূর হয় তবে তা চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাড়ায় কয়েকগুন।” বললেন এই গবেষক।
গবেষণার জন্য ৫ হাজার ২শ’ ৩৯ জন পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তির স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য পর্যালোচনা করেন গবেষকরা। প্রত্যেকের ‘অডিওমেট্রিক হিয়ারিং টেস্ট’ করা হয় যা শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়া নির্ণয়ের আদর্শ উপায়। সেই সঙ্গে তাদের হতাশাগ্রস্ততার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা।
বয়স্ক ব্যক্তিদের দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থান দখল করে আছে শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সমস্যাটি।
আর এই সমস্যা হতাশাগ্রস্ততা ছাড়া্ও আরও নানান সমস্যা ডেকে আনে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস এবং ‘ডিমেনশিয়া’ এদের মধ্যে অন্যতম।
তাই বয়স্ক ব্যক্তিদের শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করা এবং সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার জোরদার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন