সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীনা পররাষ্ট্রনীতিতে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পরিবর্তন ঘটেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চীন এ ধরনের পরিবর্তনের পথ গ্রহণ করেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর চীনাদের প্রবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রবেশ সীমিত করার প্রয়াসের ব্যাপারে সচেতন হয়ে বেইজিং তার প্রতিবেশীদের প্রকাশ্যেই কাছে টানার নীতি গ্রহণ করেছে। তবে এক ধরনের সামরিক বাহিনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চীনা উচ্চাভিলাষে পরিবর্তন ঘটেনি। ভারতের নিকট প্রতিবেশিদের মধ্যে চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের অব্যাহত বিকাশ স্পষ্টভাবেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।
চীন-পাকিস্তান সামরিক সহযোগিতা বর্তমানে সামরিক কার্যক্রমকেন্দ্রিক। চীনা সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলো পাকিস্তানি সামরিক ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, দুই দেশ যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। পরমাণু অস্ত্রপ্রযুক্তি, যুদ্ধজাহাজ, বিমান, ক্ষেপণাস্ত্রসহ সামরিক সম্ভার পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করছে চীন। সম্প্রতি পাকিস্তানের আকাশ সক্ষমতাও বাড়িয়ে তুলছে চীন। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠিত উপগ্রহ কেন্দ্রগুলোকে চীনের বেইদু স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারত সীমান্তে মহড়া চালাচ্ছে। এসবের মাধ্যমে চীন তার সামরিক বাহিনীর তৎপরতা বাড়িয়ে তুলেছে। আর সবই করা হচ্ছে ‘চীনা স্বপ্নকে’ বাস্তবায়ন করার জন্য। আর এর অংশ হচ্ছে মহাসাগরীয় শক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা। এই প্রেক্ষাপটে চীন তার দায়দায়িত্বের কিছু অংশ পাকিস্তানকে তুলে দিচ্ছে।
একটি সরকারি মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, চীন তার প্রথম বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে বড় ধরনের আধুনিকায়নের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে বলা হয়, লিয়ানিং নামের এই বিমানবাহী রণতরীটিকে পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করা হবে ভারতকে মোকাবিলার জন্য। পাকিস্তানই এই রণতরীটির গন্তব্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি পাকিস্তানের গোয়াদর ও করাচিতে মোতায়েন করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দুই বন্দরকে চীনের কৌশলগত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করে চীন।
চীনা নৌবাহিনী মনে করে, পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগর সুরক্ষিত রাখার জন্য তার অন্তত ৫ থেকে ৬টি বিমানবাহী রণতরীর প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে চীন ২০২৫-২০৩০ সাল নাগাদ আরো ৫টি বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
তাছাড়া পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকেও জোরদার করার জন্য সহায়তা করে যাচ্ছে চীন। আর দেশটি পাকিস্তানকে অত্যাধুনিক চতুর্থ প্রজন্মের জে-১০সি জঙ্গিবিমানও পাঠাচ্ছে। এই বিমান ফ্রান্সের রাফালের সমতুল্য বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল কেনার কথা ঘোষণা করার পরই চীন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন