বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রাতের আঁধারে অভিযান চালিয়ে মুসলমানদের তাড়ানো হচ্ছে

রাখাইনে নতুন সেনাঘাঁটি নির্মাণ করছে মিয়ানমার, বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা নির্ধারণ অত্যন্ত কঠিন : জাতিসংঘ

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম


এ পর্যন্ত এক লাখ ৬২ হাজার মানুষ মিয়ানমারের মধ্যেই বাস্তুচ্যুত


রাখাইন রাজ্য থেকে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের তাড়িয়ে দিয়ে সেখানে বেশ কয়েকটি নতুন সেনাঘাঁটি তৈরি করছে মিয়ানমার। দেশটির এ পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা ইয়াংঘি লী শুক্রবার নিউইয়র্কে এ উদ্বেগের কথা জানান। নিউইয়র্কে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন (এফআরসি) আয়োজিত এক সভায় তিনি আরও বলেন, রাখাইন রাজ্য থেকে এখনও মুসলমানদের তাড়ানো হচ্ছে। সেনাবাহিনীর সাজোঁয়া যান রাতের আঁধারে রাখাইনে অভিযান চালাচ্ছে বলে সেখানকার বাসিন্দারা অভিযোগ করছে। অনেকে গোলাগুলির শব্দে আতংকে বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। রাখাইন থেকে মুসলমান ছাড়া অন্য নৃগোষ্ঠীর লোকজনও পালাতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত এক লাখ ৬২ হাজার মানুষ মিয়ানমারের মধ্যেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ বেধে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন লী। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ২৫ অক্টোবর থেকে সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের হামলা ও নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার খেকে নতুন করে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে। অপর এক খবরে বলা হয়, মিয়ানমারজুড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এমন যে, তার সংখ্যা নির্ধারণ অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ। মিয়ানমারে আরো বাড়ছে আভ্যন্তরীণ বাস্তচ্যুত মানুষের সংখ্যা। একই সঙ্গে সেখান থেকে দলে দলে মানুষের দেশত্যাগের ঘটনার বিষয়েও সতর্কতা দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) অফিস। শুক্রবার ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেচিক এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন। এতে মিয়ানমারের ভিতরে বেসামরিক মানুষের আভ্যন্তরীণভাবে পালাতে এবং সীমান্ত অতিক্রম করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ইউএনএইচসিআর তার বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় এমন ঘটনা ঘটছে। ২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিক থেকে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নৃশংসতা শুরু হয়। তারপর থেকে কমপক্ষে ৭ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই মুসলিম রোহিঙ্গা। মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় মানবাধিকারের ওপর যে প্রভাব পড়েছে তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন আন্দ্রেজ মাহেচিক। উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশের ভিতরে বাস্তুচ্যুত ও দেশ থেকে বিদেশমুখী শরণার্থীদের বিষয়ে। তিনি আরো বলেন, আন্তঃএজেন্সি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইউএনএইচসিআর মিয়ানমারের আক্রান্ত এলাকাগুলোতে মানবিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দুনিয়া থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়। ওই সময় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে। আন্দ্রেজ মাহেচিক বলেন, যে পরিমাণে মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে মানুষ তার সংখ্যা নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। আমরা আমাদের রিপোর্টে জানতে পেরেছি যে, ২০০ মানুষ আশ্রয় খুঁজেছেন। তারা রাখাইনে কার্যকর কোনো সুবিধা পাননি। অন্য রাজ্যেও তা পাননি। বর্তমানে সেখানে সহিংসতার ফলে আভ্যন্তরীণভাবে যে পরিমাণ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদেরকে সংখ্যা আমরা নির্ধারণ করতে পারছি না। এমন অবস্থায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। নির্যাতনের শিকার এসব বেসামরিক মানুষের সংখ্যা নির্ধারণ ও তাদের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানানো হয়েছে, যারা গত কয়েক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদারতার প্রশংসা করেছে ইউএনএইচসিআর। এএফপি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
jack ali ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১০:৫৩ এএম says : 0
May Allah's curse upon those who do not protect the right of Muslim and other ethnic group in Myanmar---Ameeen
Total Reply(0)
Ferdous ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:৫৪ পিএম says : 0
Humanitarian aid
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন