‘দ্যা ভ্যাটিকান ইজ আ গে অর্গানাইজেশন’ অর্থাৎ ভ্যাটিকান একটা সমকামী সংস্থা- ফ্রান্সের লেখক ফ্রিডেরিক মারটেল এই নামে একটি বই লেখার পর তা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। ফ্রেঞ্চ এই লেখক দাবি করছেন, ওই বইয়ে তিনি ক্যাথলিক চার্চের প্রাণকেন্দ্রে (ভ্যাটিকান) কীভাবে দুর্নীতি হয় এবং সেখানে যেসব ভণ্ডামি লুকিয়ে আছে তা উন্মোচন করেছেন। প্রায় চার বছর ধরে অনুসন্ধান করে বইটি লিখেছেন ফ্রিডেরিক মারটেল। যিনি একজন সাংবাদিক ও সমাজবিজ্ঞানী। তিনি দাবি করেছেন, কয়েক হাজার যাজক গোপনে সমকামী জীবনযাপন করেন। আবার তারাই জনসাধারণের সামনে এই সমকামিতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন ‘তারা সমকামিতা নিয়ে যতটা সমালোচনা করেছে তারা গোপনে সমকামী জীবন উপভোগে ততোটাই কামুক।’ বইটি লেখার জন্য ৪১জন কার্ডিনাল, ৫২ জন বিশপ এবং দুইশর বেশি যাজক, শিক্ষার্থী এবং রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন বলে জানান ফ্রিডেরিক মারটেল। তিনি বলেন, ‘চার বছরের অনুসন্ধানের ফলাফল এই বই। আমি কয়েকটা দেশে গিয়েছি এবং কয়েক ডজন কার্ডিনাল, বিশপ, যারা যাজক হওয়ার জন্য শিক্ষা নিচ্ছে এবং যারা ভ্যাটিকানের সাথে যুক্ত তাদের সাক্ষাতকার নিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক তরুণ যারা তাদের গ্রামে নিজেদের যৌন বৈশিষ্ট্যের জন্য নিগৃহীত হয় তারা পালানোর একটা পথ হিসেবে যাজক জীবনকে বেছে নেয়। এভাবেই চার্চ একটা ইন্সটিটিউশনে পরিণত হয়েছে যেখানে বেশিরভাগ সমকামী। ফ্রিডেরিক মারটেল দাবি করে বলেন, ‘আমি আবিষ্কার করেছি- ভ্যাটিকান একটা উচ্চ পর্যায়ের সমকামী সংস্থা। সমকামীরা একটা কাঠামো তৈরি করেছে যার ফলে দিনে তারা তাদের যৌন বৈশিষ্ট্য দমন করে রাখে। কিন্তু রাতে প্রায় ক্যাব (গাড়ি) নিয়ে সমকামী বারে যায়।’ একটা সূত্র মারটেলকে জানিয়েছে- ভ্যাটিকানে ৮০ শতাংশ সমকামী রয়েছে। তবে নিরপেক্ষভাবে সংখ্যাটি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। লেখক বলেছেন, তিনি এমন অনেক প্রমাণ পেয়েছেন যেসব যাজকরা জনসাধারণের কাছে সমকামিতা নিয়ে কটাক্ষ করে কিন্তু ব্যক্তিজীবনে তারা সমকামী। এমন হাজারো উদাহরণ রয়েছে বলে তিনি তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন। এদিকে মারটেলের অভিযোগের বিষয়ে ভ্যাটিকানের সাথে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ধর্মতত্ত¡ বিশেষজ্ঞ জেমস মার্টিন ফ্রেঞ্চ এই লেখক যে উপায়ে সাক্ষাতকার থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন ‘মারটেল তার বই এর জন্য গভীর অনুসন্ধান করেছে এবং তিনি চার্চে সমকামিতা এবং ভণ্ডামির কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দিয়েছেন। কিন্তু এই ধারণা বরফ ধসের নিচে যেমন চাপা পরে তেমনি ভাবে চাপা পরে যাবে পরোক্ষ বক্রোক্তি, রটনা, গুজবের মতো করে। এটা পাঠকদের হতবিহবল করে দেবে। বাস্তবতা এবং মিথ্যা গল্পের মধ্যে পার্থক্য করার মতো এটিও নির্ণয় করা কঠিন হবে।’ বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন