মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত একটি উপনির্বাচনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোট হেরে গেছে। ওই আসনে গত নির্বাচনে জিতে এসেছিল তারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে মাহাথির সরকারের বিষয়ে হতাশা রয়েছে ভোটারদের। তাছাড়া বর্ণবৈষম্য নিরসনে জাতিসংঘের ঘোষণায় সম্মত হওয়া না হওয়া নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়দের রয়েছে শঙ্কা। জাতিসংঘের ঘোষণায় মাহাথির সরকার সম্মতি দিলে মালয়দের বাড়তি সুযোগ সুবিধা বাতিল হয়ে যেতে পারে।
মালয়েশিয়ায় ২০১৮ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হয় মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোট পাকাতান হারাপান (নতুন আশা)। দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন দল বারিসান ন্যাসিওনালেকে হারিয়ে সরকার গঠন করেন মাহাথির। এতে তিনি সমর্থন পান আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের। নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতাহারা প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানান অভিযোগের তদন্ত শুরু করে মাহাথির সরকার।
গত জানুয়ারি মাসে সেলাঙ্গর প্রদেশের সেমেনিয়াহ আসনে পাকাতান হারাপান জোটের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন। ফলে আসনটিতে উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয়। এই উপনির্বাচনে পাকাতান হারাপানের প্রার্থী প্রায় দুই হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। নির্বাচনে জয়লাভ করেন বারিসান ন্যাসিওনালের প্রার্থী।
রয়টার্স লিখেছে, এই হার মাহাথির সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। জোটটির বিরুদ্ধে একদিকে রয়েছে প্রতিশ্রুত সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ। অন্যদিকে অসন্তোষ রয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয় নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের। মালয় নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা মনে করে, ‘অ্যাফার্মেটিভ অ্যাকশন প্ল্যানের’ অধীনে তারা চাকরি-শিক্ষায় যে সুযোগ পায় মাহাথির সরকার তা বাতিল করে দেবে।
এ শঙ্কার উদ্ভব জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবনাকে কেন্দ্র করে। সব বর্ণবৈষম্য নিষিদ্ধ করতে সংস্থাটির একটি প্রস্তাবে স্বাক্ষর করার কথা মালয়েশিয়ার। ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন দ্য এলিমিনেশন অব অল ফরমস অব রেসিয়াল ডিসক্রিমিনেশন’ (আইসিইআরডি) নামক ঘোষণাটি সমর্থন না করার দাবিতে মালয়রা গত বছর কুয়ালালামপুরে সমাবেশ করে। তাতে যোগ দেন ক্ষমতাহারা প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।
গত বছরের নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে জরিপ সংস্থা মারদেকা সেন্টার জানিয়েছিল, চীনা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত মালয়েশীয়দের ব্যাপক সমর্থন পেলেও পাকাতান হারাপান সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়দের মাত্র ৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন