বাড়িতে হোক কিংবা ক্লাসরুমে হোক বাচ্চাদের মনোযোগ পাওয়ার জন্য যে-সব বাবা মাকে হিমশিম খেতে হয়, তাদের উচিত হচ্ছে সন্তানের টিবি দেখা বা ভিডিও গেম খেলা সীমিত করে দেওয়া। কেননা নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, তরুণ বয়সে মনোসংযোগ সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে টিভি দেখা ও ভিডিও গেম খেলার একটা সম্পর্ক আছে। প্রাথমিক স্কুলে পড়া ও কলেজ পড়–য়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির তিন মনোবিজ্ঞানীর পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে-সব ছেলেমেয়েদের নিয়ে দৈনিক দু‘ঘন্টার বেশি টিভি দেখেছে বা ভিডিও গেম খেলেছে তারা গড় হারের দেড়গুণ থেকে দু‘গুণের বেশি মনোসংযোগ সমস্যা কবলিত হয়েছে। গবেষকরা ১৩ মাসে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম গ্রেডের ১,৩২৩ জন ছেলেমেয়ের উপর সমীক্ষা চালান। এক্ষেত্রে তারা টিভি দেখা ভিডিও গেম খেলা নিয়ে এসব ছেলেমেয়ে ও তাদের বাবা-মায়ের পরিবেশিত তথ্য এবং এবং ছেলে-মেয়ের মনোসংযোগ সমস্যা সম্পর্কে শিক্ষকদের রিপোর্টগুলোকে কাজে লাগান। ২১০ জন কলেজ ছাত্র-ছাত্রীর আর একটি গ্রæপ টিভি দেখা, ভিডিও গেম খেলা ও মনোসংযোগ সমস্যার উপর নিজেরাই রিপোর্ট পরিবেশন করে। আগের গবেষণায় টিভি দেখার সংগে শিশুদের মনোসংযোগ সমস্যা সম্পর্কে লক্ষ্য করা হয়েছিল। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ভিডিও গেমের পেছনে বাচ্চারা যে সময়টুকু ব্যয় করে সেটাও তাদের মনোসংযোগের উপর অনুরূপ প্রভাব ফেলে থাকে। তারপরও গবেষকদের কাছে এটা স্পষ্ট নয়, কেন স্ক্রিন মিডিয়া তাদের মনোসংযোগ সমস্যা বাড়ায়। অনেক গবেষকের ধারণা, পর্দায় দ্রæতগতিতে দৃশ্যবদলের কারণে এমন হয় কিংবা টেলিভিশন ও ভিডিও গেম দৃষ্টি কেড়ে নেওয়ার স্বাভাবিক যে দিকগুলো ব্যবহার করে সেগুলোর কারণে এটা হতে পারে। ডগলাস জেনটাইল নামের এক মনোবিজ্ঞানী বলেছেন, মস্তিষ্কবিজ্ঞান বলে মস্তিষ্ক যা করে সেটাই হয়ে দাঁড়ায়। আমরা যদি শিশুদের মস্তিষ্কের এমন পরিবেশে অভ্যস্ত করে তুলি যেখানে সর্বক্ষণ উদ্দীপ্ত হওয়ার ব্যবস্থা আছে। সেখানে আলো, শব্দ, ক্যামেরার অ্যাঙ্গেলের সর্বক্ষণ পরির্বতন ও কম্পন হচ্ছে যা ছায়াছবি ও ভিডিও গেমগুলোতে হয়ে থাকে। তা হলে মস্তিষ্কও সে ভাবে ধাতস্থ হয়ে উঠবে। শিশুরা যখন ধাতস্থ হয়ে ওঠা মস্তিষ্ক নিয়ে ক্লাসরুমে যায় তখন সেখানে এধরনের কিছু পায় না। তখন শিক্ষকের নীরস পাঠদানের প্রতি মনোসংযোগ পেতে বেশ বেগ পেতে হয়।
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন