বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভেনিজুয়েলায় জরুরি অবস্থার মধ্যেই রাস্তায় সংঘর্ষ, ৪ জন গ্রেফতার বিক্ষোভে উত্তাল কারাকাস

প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : টালমাটাল হয়ে উঠেছে ভেনিজুয়েলার রাজনীতি। জরুরি অবস্থার মধ্যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রাজধানী কারাকাস উত্তাল। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে খবরে বলা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর পদত্যাগের দাবিতে ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। গত বুধবার বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে সরকারবিরোধীরা জাতীয় নির্বাচন পরিষদ ভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। ফলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও পানির বোতল ছুড়ে মারে। জবাবে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ ঘটনার জের ধরে সরকারবিরোধী মিছিল থেকে চারজনকে আটক করা হয়। এর আগে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে বুধবার সকালেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল কারকাসের ১৪টি পাতালস্টেশন। যদিও সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে তারা স্টেশনগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জনগণ যাতে অংশ নিতে না পারে এ জন্যই তারা এ ব্যবস্থা নিয়েছিল। বিশ্ববাজারে তেলের দাম ধরে না রাখতে পারায় তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে মাদুরো সরকার।
ফলে দেশটির জীবনযাত্রার মান বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের মুখে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের দাবি করেছে বিরোধী দল। কিন্তু বিরোধী দলের এ দাবিকে অগ্রাহ্য করে গত শুক্রবার দেশে ৬০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তার দাবি, দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে তার সরকারের অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রয়োজন। কিন্তু ভেনিজুয়েলার বিরোধী দলগুলো সরকারের এই দাবিকে মেনে নিতে রাজি নয়। তাই কয়েক দিন ধরেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলন। এদিকে, বিক্ষোভকারীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি জানাচ্ছে, ভেনিজুয়েলায় এ মুহূর্তে কোনো স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। খাবার ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব যেমন প্রকট, তেমনি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে লুটপাটের মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে। তারপরও সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোনো অনাস্থা ভোট বা পুনঃনির্বাচন না করার ব্যাপারে এখনো অনড় রয়েছেন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। অপর এক খবরে বলা হয়, ভেনিজুয়েলায় জরুরি অবস্থা ভেঙে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে দেশটির সাধারণ জনগণ। সরকারবিরোধী বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় নির্বাচন পরিষদের কার্যালয় ঘেরাও করতে যেতে চাইলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
কারাকাসে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, এবার তারা দৃঢ়ভাবে মাঠে নেমেছে। এর একটা সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবে। ওই বিক্ষোভকারী বলেন, দেশটি তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় ওষুধও সরবরাহ করতে পারছে না সরকার। এভাবে দেশ চলতে পারে। কংগ্রেসে বিরোধী ডানপন্থি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট মাদুরো কংগ্রেসে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পূর্বে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এদিকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ডিক্রি জারির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন এবং মুদ্রা স্থানান্তরের ওপর আরো বেশি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন। ভেনিজুয়েলায় বিশ্বের সর্বাধিক তেলের মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তেলের মূল্য হ্রাসের কারণে গত ১৮ মাসে দেশটির প্রায় ৬০% আয় কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে মুদ্রাস্ফীতির ওপর। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি পূর্বের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১৪১% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির আয়ের ৯৫% আসে তেল রপ্তানি থেকে। বিবিসি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন