বিশ্বব্যাপী ৫৩টি দেশের ১১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বর্তমানে ‘চরম ক্ষুধা’র মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ডব্লিউএইচএ)’র ২০১৯ সালের খাদ্য সংকট নিয়ে করা বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। সেখানে বলা হয়, যুদ্ধ এবং জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে চলতি বছরে এই ভয়াবহতার সৃষ্টি হয়, যার নির্মম আঘাত আসে আফ্রিকান অঞ্চলে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে খাদ্য সংকটের তালিকায় বাংলাদেশর নামও রয়েছে। খবর এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের মোট ৮টি দেশের মধ্যে ইয়েমেন, কঙ্গো, আফগানিস্তান এবং সিরিয়া সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ। ৩ বছর আগে এই প্রকল্প চালু করে সংস্থাটি, যারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপর্যয়ে থাকা দেশের তালিকা করে।
এফএওর জরুরি অবস্থা বিভাগের পরিচালক ডমিনিক বুর্জোয়া বলেন, ‘আফ্রিকা মহাদেশের অন্তত ৭ কোটি ২০ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় ভয়াবহভাবে প্রভাবিত। যুদ্ধ-সংঘর্ষ, নিরাপত্তাহীনতার সঙ্গে অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং জলবায়ু-সংক্রান্ত ঝড় যেমন খরা ও বন্যাকে মূল কারণ হিসেবে প্রতিবেদনটিতে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।’
দুর্ভিক্ষের প্রান্তে থাকা দেশগুলির ৮০ শতাংশ জনসংখ্যাই কৃষির ওপর নির্ভর করে। কৃষি উন্নয়নে সহায়তাসহ তাদের খাদ্য ও ব্যবস্থাগুলির জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা দরকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশি দেশের যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট শরণার্থী সংকটের পাশাপাশি সিরিয়াতে প্রচুর খাদ্যসংকট দেখা দিবে। মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালালে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে ১০ লক্ষাধিক শরণার্থী আশ্রিত হয়।
এফএও বলেছে, এই বছরও বিশ্বে উদ্বাস্ত লোকের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ‘ভেনিজুয়েলাতে যদি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট চলতে থাকে’ তাহলে খাদ্য সংকটে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০১৭ সালের তুলনায় বিশ্বব্যাপী সামগ্রিক পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। ২০১৭ সালে ১২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন ছিল। আংশিক এই উন্নতির কারণ হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে যে, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের কিছু দেশ পূর্ববর্তী বছরগুলিতে মারাত্মক প্রাকৃতিক বিপর্যয় মুখোমুখি হয়েছিল। তবে, এফএওও সতর্ক করে দিয়েছিল যে, ক্রমবর্ধমান দুর্ভোগের মুখে ১০কোটিরও বেশি লোক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারে। ২০১৮ সালে আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়া চরম খরার শিকার হয়েছিল, যা কৃষি উৎপাদনকে গুরুতরভাবে আক্রান্ত করেছিল। বিশ্বব্যাপী শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগবে, অনেক দেশে শিশুরা বেড়ে ওঠার আগেই প্রাণ হারাবে বলে জানায় সংস্থাটি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন