উন্নয়নে অর্থায়নের জন্য চীনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামকে এ জন্য ব্যবহার করেছেন তিনি। ওই সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরোধ জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের প্রতি। শুক্রবার ওই সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তিনি। ইমরান খান বলেন, এই সুযোগ ব্যবহার করে আমি আপনাদের সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমাদের উদার পররাষ্ট্রনীতির দেশে বিনিয়োগ করতে এবং আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে। বিশেষ করে অবকাঠামো প্রকল্প, রেলওয়ে, ড্যাম, আইটি ও কলকারখানায় এসব বিনিয়োগ করতে পারেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। চীন ও পাকিস্তানের নেতারা একে অন্যকে ‘আয়রন ব্রাদার’ হিসেবে বর্ণনা করেন। কখনো কখনো তারা নিজেদের বন্ধুত্বকে ‘হিমালয়ের চেয়েও উঁচু এবং সাগরের গভীরতার চেয়েও গভীর’ বলে আখ্যায়িত করেন। ইমরান খান যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন, তখন তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কট পাকিস্তানে। ওই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে পাকিস্তানকে ৬০০ কোটি ডলার ঋণ দেয় সউদী আরব। বেইজিংয়ে ফোরামের মিটিংয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অর্থ বিষয়ক তহবিল আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লগার্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইমরান খান। তার দেশে ‘বেইলআউট প্যাকেজ’ অনুমোদনের জন্য আইএমএফকে রাজি করানোর জন্য চেষ্টা করছেন তিনি। বেইলআউট হলো আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলায় নতুন কোনো উৎস থেকে নগদ অর্থ সরবরাহ। পাকিস্তান আইএমএফের কাছ থেকে এই সহায়তা চাইলেও তারা দেশটিকে নিয়ে সংশয়ে। কারণ, চীন-পাকিস্তান করিডোরের মাধ্যমে পাকিস্তান উদ্বেগজনক একটি অবস্থানে আছে। বেইজিংয়ের ওই সম্মেলনে যোগ দেয়নি ভারত। এর কারণ, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প যাবে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের ভিতর দিয়ে। ভারত মনে করে এতে জাতীয় সার্বভৌমত্বে আঘাত লাগতে পারে। এ কারণে, ওই সম্মেলনে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকে ভারত। এ ছাড়া চীন গরিব দেশগুলোতে ঋণ দিয়ে তাদেরকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে এমন ইস্যুতেও ভারত এ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ওই ফোরামে যোগ না দেয়ায় ভারত অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এমনটা মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রে এশিয়া প্রাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রফেসর মোহন মালিক। বেইজিং ফোরামে বক্তব্যকালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং ইঙ্গিত দিয়েছেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা এর স্বচ্ছতায় ঘাটতি, পরিবেশগত ঝুঁকি এবং বিদেশী অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে চীনের জড়িত হওয়া নিয়ে। এ বিষয়ে তিনি নতুন করে ধারণা দেবেন। সি জিনপিং বলেন, সব কিছুই হওয়া উচিত স্বচ্ছতার সঙ্গে। দুর্নীতির বিষয়ে আমাদেরকে শূন্য সহনশীলতা নিতে হবে। টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন