লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে আবারও হামলা চালাল মাওবাদীরা। মাওবাদীদের আইইডি বিস্ফোরণে কাঁপল মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলি। গত বুধবার সকালে এ হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। ওই এলাকাতেই কমপক্ষে ৩০টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল মাওবাদীরা।
১৯৬০-এর দশক থেকে ভারতে মাওবাদী বিদ্রোহে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। চীনের মাও সেতুংয়ের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এই গেরিলারা রাষ্ট্রের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দাবি করছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ডিআইজি অঙ্কুশ শিন্ডে বলেন, ‘‘একটি গাড়িতে করে কুরখেড়া থানা থেকে ক্যুইক রেসপন্স টিম পুরাদা গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিস্ফোরণ ঘটে। ১৫ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।’’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমগুলোর দাবি, সকালে নজরদারি চালানোর সময় নিরাপত্তারক্ষীদের কনভয় টার্গেট করে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। ফলে দুটি গাড়ি সম্পূর্ণ উড়ে যায়। এই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ‘সি-৬০’ ইউনিটের কমান্ডোদের অনেকেরই। এতে গুরুতর আহত হন বেশ কয়েকজনও। মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত থেকে ওই এলাকার ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কে নির্মাণ কাজের জন্য আনা প্রায় ২৭টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় মাওবাদীরা। এদিন সেই জায়গাতেই পাঠানো হয়েছিলো কুইক রেসপন্স টিমের ওই কমান্ডোদের। টিমের সদস্যরা কুড়খেডা থেকে যাচ্ছিলেন। গাড়িটিতে প্রায় ৬০ জন কমান্ডো ছিলেন। সেই গাড়ি যাওয়ার সময় স্থানীয় জাম্বোরখেডা ও লেন্ডহারির মাঝে বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। এ ঘটনায় মহারাষ্ট্র জুড়ে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
বুধবার ছিলো মহারাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা দিবস। সে উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান চলছিল। তার মধ্যেই হামলা চালায় মাওবাদীরা। গত বছর ২২ এপ্রিল নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখানেই নিহত হয় ৪০ জন মাওবাদী। সেই অভিযানে ছিলো সি ৬০-এর কমান্ডোরাই। সে ঘটনার এক বছরপুর্তিতে সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি চালাচ্ছে মাওবাদীরা। বুধবারের হামলাকে সেই প্রতিবাদেরই অংশ বলে মনে করছে পুলিশ।
কয়েকদিন আগে ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়ায় বিজেপি বিধায়কের কনভয়ে আইইডি হামলা চালায় মাওবাদীরা। এ হামলায় ৫ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক ভীমা মান্ডভি। কয়েক মাস আগে দান্তেওয়াড়ায় মাওবাদী হামলায় মৃত্যু হয়েছিল দূরদর্শনের সাংবাদিক ও ২ জন পুলিশ কর্মীর। ওই হামলায় জখম হয়েছিলেন আরও ২ জন।
ভারতজুড়ে চলছে দেশটির ১৭তম জাতীয় নির্বাচন। ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এখনো বাকি রয়েছে ৩ দফা। নিরাপত্তাবাহিনী মুলত ভোটের নিরাপত্তার কাজে সেখানে কর্তব্য পালন করছিলেন। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন