শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ধর্মীয় বিদ্বেষ দিয়ে এ যুগেও ভোটার টানা সম্ভব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

এই সময়ে এসে ভারতে সা¤প্রদায়িক রাজনীতি বিজয়ী হয়েছে। আর এটিই প্রজাতন্ত্রটির ভবিষ্যৎ নিরূপণ করে দেবে। বুদ্ধিজীবীদের দেয়া পূর্বাভাসকে নাকচ করে দিয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ভারতে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। বুদ্ধিজীবীরা বলেছিলেন, ভারতের অর্থনৈতিক সংকটে মোদির ভোট ব্যাংকে ভাটা পড়েছে। লোকসভা নির্বাচনের এই ফল সত্যিই বিস্ময়কর ও দুঃখজনকভাবে দেখিয়েছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সা¤প্রদায়িক রাজনীতি ব্যবহার করেও ভোটারদের প্রলুব্ধ করা সম্ভব হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নির্বাচনের আগের কয়েকটি মাস মোদির প্রচার মুসলিমবিদ্বেষ ও পাকিস্তানবিরোধী বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতায় টইটুম্বুর ছিল। জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগিয়ে তুলতে এই সময়ে পাকিস্তানের ভূখন্ডের সরাসরি বোমা হামলা চালিয়েছে ভারত। এখন সেই উত্তেজনা নেই। আমরা আশা রাখছি, সংখ্যালঘুদের ভীতি প্রদর্শন জোরদারে হিন্দু উগ্রপন্থীদের উসকানি দিতে পারে এমন গলাবাজি বন্ধ করবেন মোদি। এবং উপমহাদেশে টেকসই শান্তির জন্য বাস্তবিক পথকে এগিয়ে নিতে তিনি অবশ্যই মনোযোগ দেবেন বলে আশা রাখছি। আর এটা সম্ভব কেবল সংলাপের অবিচল প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে, পাকিস্তান বারবার যে প্রস্তাব দিয়েছে এবং ভারত অনবরত তা প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার একদিন আগে কিরঘিজিস্তানের বিসকেকে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন পাকিস্তানে তার সমকক্ষ শাহ মেহমুদ কোরাইশি। এতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলেছে বলে আশা জাগিয়েছে। পত্রিকার খবরে দেখা গেছে, সুষমা স্বরাজ মিষ্টি ভাগাভাগি করেছেন এবং স্বীকার করেছেন, অতীতের আলাপচারিতা ছিল তিক্ততায় পূর্ণ। আগের ঘটনাবলিকে পেছনে ফেলে ওই বৈঠক বলে দিচ্ছে, গত কয়েক মাসের সম্পর্কের অবনতির পর ওই বৈঠকে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্ক পুনর্প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু এই আশাবাদ থাকলেও ভারতের অতীত ইতিহাস বলছে না দেশটির সত্যিকার শান্তির আকাঙ্ক্ষা লালন করছে। এমনকি পুলওয়ামায় হামলার আগেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কার্তারপুরের অনুষ্ঠানে একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এতে নিজের অনুপস্থিতি দিয়ে সুষমা স্বরাজ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পাকিস্তানে সার্ক সম্মেলনের বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেনও তিনি। পাকিস্তানে পিটিআই ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কয়েকবার ভারতের সঙ্গে সংলাপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শান্তির সুযোগ দিতে মোদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ইমরানের এসব আমন্ত্রণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন মোদি। ভারতীয় সরকারের কাছ থেকে ধারাবাহিক শীতল আচরণ আসা সত্তে¡ও পাকিস্তান সংযম ও বাস্তবিকতার পরিচয় দিয়েছে। বুধবার বিসকেকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোরাইশি তেমনই একটি বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তিনি সংলাপের প্রস্তাব ফের টেবিলে রেখেছেন। ভারতে কট্টরপন্থী সরকার শান্তি আলোচনার জন্য ভালো বলে যে দাবি ইমরান খান করেছেন, সেটির সত্যাসত্য নিয়ে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এসবের অনেকটাই নির্ভর করছে ভারতের আচরণের পরিবর্তনের ওপর। শান্তির পথে এগোনোর প্রধান বাধা হচ্ছে দেশটির কট্টরপন্থী আচরণ। তবে এই আশাবাদ পুরোটাই যে ভুল, তা বলা যাচ্ছে না। কিন্তু এ জন্য বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন আনতে হবে। আর এটা নিশ্চিত করতে ভারতের ব্যর্থতা আঞ্চলিক শান্তির জন্য মৃত্যুর ঘণ্টাধ্বনি। ডন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন