মুনশী আবদুল মাননান
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান অবিস্মরণীয়। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়, এই নীতিকে সামনে রেখে তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পুনর্গঠন করেন। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত নীতিমালার ওপর গভীর আস্থার ভিত্তিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক নীতি-দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রয়াস বিশ্বজুড়ে উচ্চ প্রশংসা লাভ করে। বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের সকল দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিক পর্যায়ে উপনীত হয়। কয়েক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের যোগাযোগ ও সম্পর্ক এতটাই বৃদ্ধি ও প্রসারিত হয় যে, তিনি নিজেও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ নেতার মর্যাদায় অভিষিক্ত হন।
এর আগে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিসর ছিল খুবই সীমিত। ভারত-রুশ বলয়ের মধ্যেই মূলত তা সীমাবদ্ধ ছিল। তার বাইরে যাওয়ার তেমন উপায়ও ছিল না। ভারত ছিল সবকিছুর নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়। এর কারণ কারো অজানা নেই। মহান মুক্তিযুুদ্ধে ভারত সর্ব প্রকার সহায়তা দিয়েছিল। তৎকালীন সরকার স্বাভাবিক কারণেই ছিল ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। তার ইচ্ছা বা অভিপ্রায়ের বাইরে যাওয়া তখনকার বাস্তবতায় সহজ ছিল না। আরও একটি বিষয় ও প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে যে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিতে বাংলাদেশের সব কিছুুর ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ স্বীকার করে নেয়া হয়। সাত দফার কথিত ওই চুক্তিতে ছিল :
১. মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে, মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধীনে থাকবে।
২. স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর সে দেশে ভারতীয় বাহিনী অবস্থান করবে।
৩. বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো সেনাবাহিনী থাকবে না।
৪. বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃংখলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীর লোকদের নিয়ে একটি সংস্থা গঠন করা হবে।
৫. ভারত বাংলাদেশের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চলবে।
৬. যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি তাদের বরখাস্ত করা হবে। প্রয়োজনে ভারতীয় কর্মকর্তাদের দ্বারা শূন্যপদ পূরণ করা হবে।
৭. বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নেয়া হবে।
এই চুক্তির মধ্যে ভারতের আধিপত্যবাদী চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির সুস্পষ্ট প্রতিফলন বিদ্যমান। স্বাধীন, সার্বভৌম কোনো দুটি দেশের মধ্যে এ ধরনের চুক্তি হতে পারে, তা কল্পনার অতীত। বাংলাদেশকে সবদিক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার যে প্রবণতার প্রকাশ এ চুক্তিতে আছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি, সার্বভৌম সমতার নীতির প্রতি ভারতের আস্থার প্রমাণ বহন করে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদির সঙ্গে সঙ্গে তার পররাষ্ট্র নীতি কি ধরনের হবে সেটাও নির্ধারণের দায়িত্ব ভারতের ওপর বর্তায়। বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর নিশ্চয়ই এই চুক্তির বিষয়ে অবহিত হয়েছিলেন। আমরা লক্ষ্য করেছি, তিনি দেশে আসার পর প্রথম সুযোগেই ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। এমন মতও আছে, তিনি নাকি ভারতীয় সৈন্যদের অবস্থান প্রলম্বিত করার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের সাক্ষ্য এই যে, ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করা হয়। এমনও শোনা যায়, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের শূন্যতা পূরণের জন্য ভারতীয় কর্মকর্তাদের আনা বা পাঠানোর উদ্যোগও কার্যকর হতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গঠিত সেনাবাহিনীও বহাল ছিল। তবে রক্ষীবাহিনীর নামে একটি বাহিনী গড়ে তোলা হয়। অবাধ বাণিজ্যের প্রাথমিক পর্যায় হিসাবে সীমান্ত বাণিজ্য চালু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রেও ভারতের দেখানো পথে বাংলাদেশ হাঁটতে চায়নি। ১৯৭৩ সালে আরব- ইসরাইল যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ আরব বিশ্বের পক্ষে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে অবস্থান নেয়। ১৯৭৪ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলন সংস্থার সম্মেলনে যোগদান করেন বঙ্গবন্ধু। শোনা যায়, এতে ভারত নাকি নাখোশ হয়েছিল। মোটকথা, সাত দফা চুক্তি উপেক্ষা করে বাংলাদেশ তার নিজস্ব পথে চলার চেষ্টা করে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এটা লক্ষ্য করা যায় যদিও ভারত-রুশ বলয়ের বাইরে যাওয়া কখনই সম্ভবপর হয়নি।
এরপর ঘটনাচক্রে জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন তখন তার প্রধান কাজ হয় ভারতের নিয়ন্ত্রণ ও ভারত-রুশ প্রভাব বলয় থেকে দেশকে বের করে আনা। তিনি অভ্যন্তরীণ সকল ক্ষেত্রে পরিবর্তন, পুনর্গঠন ও সংস্কারের যেমন উদ্যোগ গ্রহণ করেন তেমনি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করে সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলায়ও ব্রতী হন। তিনি যেমন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কার্যকর পদক্ষেপ নেন তেমনি চীনসহ অন্যান্য এশীয় দেশের সঙ্গে এবং বিশেষভাবে মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্কের নব দিগন্ত উন্মোচন করেন।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান ব্যাপকভাবে বিদেশ সফর করেন। তিনি ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান শ্রীলংকা, বার্মা, থাইল্যান্ড মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, জাপান, উত্তর কোরিয়া, সউদী আরব, মিশর, ইরাক, ইরান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিরিয়া তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, পশ্চিম জার্মানি, ইতালি, যুগোশ্লাভিয়া রুমানিয়া, যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশ সফর করে ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার ও তা বিশেষ উচ্চতায় স্থাপন করেন। এর সুফলও সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ পেতে থাকে। অধ্যাপক মুহম্মদ শামসউল হক তার নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, ‘১৯৭৮ সালে জাপানের মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের নির্বাচন, ১৯৭৭ থেকে জোট নিরপেক্ষ ব্যুরোর সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকা, ১৯৭৯ সালে জেরুজালেম কমিটিতে মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপ্রধান উভয় পর্যায়ে বাংলাদেশের নির্বাচন এবং তায়েফে ১৯৮১ সালে ইসলামী শীর্ষ বৈঠকে ৩ সদস্য ব্যুরোর সদস্য নির্বাচন এবং অন্যান্য বিশটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য হিসাবে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা পালন। সর্বোপরি দক্ষিণ এশিয়ার ৭টি রাষ্ট্রকে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য সংগঠিত করে ‘সার্ক’ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রেসিডেন্ট জিয়ার ঐতিহাসিক ও স্বার্থক উদ্যোগ বহিঃসম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশের সৃষ্টিমুখী চিন্তায় একটি উজ্জ্বল স্বাক্ষর। সদ্য স্বাধীনতা একটি রাষ্ট্রের জন্য নিঃসন্দেহে এটি এক বিরল সম্মান এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গঠনমূলক বাস্তবমুখী পররাষ্ট্র নীতির প্রতি গভীর আস্থার একটি সুস্পষ্ট স্বীকৃতি।’
বহিঃবিশ্বের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ও জোরদার করার লক্ষ্যে জিয়াউর রহমানের গৃহীত পদক্ষেপ ছিল অত্যন্ত সুচিন্তিত ও সুনির্দিষ্ট। প্রথমত, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ও সহযোগিতা বৃদ্ধিকে তিনি বিশেষ প্রধান্য দেন। এর ফলে প্রতিবেশী প্রতিটি দেশের সঙ্গেই বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠে। তিনি ছিলেন সার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা। সার্কের লক্ষ্য হিসাবে তিনি স্থির করেন পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন। দ্বিতীয়ত, মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সহযোগিতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। তার কূটনৈতিক উদ্যোগ ও পদক্ষেপের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে দেশের সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তিনি নিজে মুসলিম বিশ্বের অবিসংবাদী নেতায় পরিণত হন। ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করার জন্য একমাত্র তাকেই মনোনীত করা হয়। এটা তার ও বাংলাদেশের জন্য ছিল এক বিরল সম্মান। তৃতীয়ত, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটান। একই সঙ্গে রুশ ব্লকের দেশগুলোর সম্পর্কও বজায় রাখেন। নীতির প্রশ্নে তিনি ছিলেন ন্যায়বাদী ও আপোষহীন। বাস্তবতাবোধ ছিল তার প্রখর। তিনি সর্বক্ষেত্রে নিজেকে প্রভাব বলয়ের ঊর্ধ্বে রাখেন। দুই পরাশক্তির দ্বন্দ্বে যখন বিশ্ব দ্বিধাবিভক্ত তখন তার অবস্থান ছিল নিরপেক্ষ। তিনি কোনো পরাশক্তির প্রভাবেই প্রভাবিত হননি। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়। ১৯৭৯ সালে তেহরানে মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তাদের বন্দি করা হলে একটা ভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের আটক করা আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি ও জেনেভা কনভেশনের খেলাপ। এ সময় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসাবে বাংলাদেশ সংকট উত্তোরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইরান নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ সত্ত্বেও মার্কিন কূটনীতিকদের মুক্তি দিতে অনীহা প্রকাশ করে। এমতাবস্থায়, মার্কিন সরকার নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের পরামর্শে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব পেশ করে। এই প্রস্তাব বিবেচনার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার জিয়াউর রহমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং একই প্রস্তাব সমর্থনের অনুরোধ জানান। জিয়াউর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে কথা না দিয়ে মন্ত্রীসভার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মতামত দেবেন বলে জানান। প্রস্তাবের ওপর যখন আলোচনা হয় তখন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। তবে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ মতো প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন না জানানো বাংলাদেশের স্বার্থের বিবেচনায় ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ জিয়াউর রহমান এ ঝুঁকি নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। পরবর্তীতে জিমি কার্টার জিয়াউর রহমানকে বিজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে অভিহিত করেন।
জিয়াউর রহমান তার সংক্ষিপ্ত শাসনকালে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রে দেশকে অভূতপূর্ব উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন কায়েম করেন। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উৎপাদন ও উন্নয়নের নীতিগ্রহণ করেন এবং ব্যাপক সাফল্য লাভ করেন। জাতীয় ঐক্য-সংহতি সুদৃঢ় করার পাশাপাশি উন্নয়ন কর্মকা-ে জনগণের অংশগ্রহণ কার্যকর করার ফলে দেশ দ্রুতই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে অগ্রসর হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশে পরিণত হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়ন বাংলাদেশের ভাবমর্যাদাই বৃদ্ধি করে না এই সুবাদে অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেয়ে বাংলাদেশ বিপুলভাবে লাভবানও হয়। বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে, জনশক্তি রফতানির সূচনা হয়।
জিয়াউর রহমানের আমলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ঈর্ষণীয় অবস্থানে উন্নীত হওয়া। দেশের জন্য ছিল অত্যন্ত গৌরবের অহংকারের এবং সম্মানের। পরবর্তীকালে নেতৃত্বের অক্ষমতা, দুর্বলতা ও অপরিণামদর্শিতার কারণে এর ধারাবাহিকতায় অবনমন ঘটতে থাকে। বর্তমানে তা প্রান্তিক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক যে ক্ষুদ্র পরিসরে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল এখন অনেকটা সেই রকমই সীমিত হয়ে পড়েছে। এমন একটা দৃষ্টিভঙ্গী লক্ষণীয়, একটি বিশেষ দেশের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেই যেন চলে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের দরকার নেই। এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বহির্বিশ্ব থেকে দেশ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এটা দেশের জন্য কল্যাণবহ বলে বিবেচিত হতে পারে না। জিয়াউর রহমানের অনুসৃত স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির অনুসরণই দেশের পূর্ব গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারে।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন