ভারতে ঝাড়খন্ডে ‘চোর সন্দেহে’ এক মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ১৮ ঘণ্টা ধরে বেধড়ক মারধরের পর অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। এর আগে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’, ‘জয় হনুমান’ বলতে বাধ্য করা হয় তাকে। নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার ২৪ বছরের ওই যুবকের নাম তাবরেজ আনসারি। ইতোমধ্যেই ঝাড়খন্ডের খারসাওয়ান এলাকার ওই গণপিটুনির একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি তাবরেজকে একটি কাঠের লাঠি দিয়ে নৃশংসভাবে মারধর করছে। আক্রান্ত যুবক ছেড়ে দেওয়ার আকুতি নিয়ে হাত জোড় করলেও তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই মারধরকারী উন্মত্ত ব্যক্তির। আরেক ভিডিওতে দেখা গেছে, জোর করে তাবরেজকে বলানো হচ্ছে জয় শ্রী রাম ও জয় হনুমান। অনলাইন মুম্বই মিরর এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, জামশেদপুরের খারসাওয়ানন্দ সারাইকেলাতে সন্দেহজনকভাবে স্থানীয়রা রোববার চোর সাব্যস্ত করে ওই যুবককে। তাকে বেদম মারপিট করা হয়। এরপর তাকে রোববার সকালে ভর্তি করা হয় সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয় জামশেদপুরে টাটা মেইন হাসপাতালে। তার পরিবারের দাবি, তার ওপর যে হামলা হয়েছে তা সা¤প্রদায়িক। তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘জয় হনুমান’ শ্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়েছে। পরিবার আরো বলছে, স্থানীয় কিছু মানুষ তাবরেজকে প্রচন্ড মারপিট করে। পরে তাকে তুলে দেয় পুলিশে। চুরির সন্দেহে তার সঙ্গে এমন আচরণ করা হলেও সে সা¤প্রদায়িক হামলার শিকার। তাকে মারপিট করা হয়েছে সে একজন মুসলিম বলে। তাবরেজের একজন আত্মীয় মাকসুদ আলম বলেছেন, বার বার তাবরেজকে ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘জয় হনুমান’ শ্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে দেখতে যেতে চাইলেও আমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়নি। ওই হামলার ভিডিও আছে আমাদের কাছে। আমরা চাই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হোক। ওই সময় যেসব পুলিশ সেখানে দায়িত্বে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা চাই আমরা। এ বিষয়ে একটি মামলা করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, উন্মত্ত জনতা তাকে মারধর করছে। এরমধ্যেই তিনি কাতরে বলতে থাকেন, আমার মা মারা গেছেন। তার নামে শপথ করে বলছি, আমি এমন কাজ (চুরি) করিনি। তবে তবরেজের কথা কথা কেউ শুনতে চায়নি। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, মুম্বই মিরর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন