স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেয়া গোয়েন্দা রিপোর্টের তথ্য
ইনকিলাব ডেস্ক : দেশ ছেড়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জিহাদি সংগঠনে যোগ দিতে মানসিকভাবে তৈরি রয়েছেন ভারতের অন্তত ৫শ’ মুসলিম যুবক। জম্মু-কাশ্মীর, কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যের এই যুবকদের লক্ষ্যই হল খিলাফত বা ইসলামি ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে পশ্চিমা দুনিয়াকে শিক্ষা দেওয়া। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই তথ্য জানিয়েছে। এর আগে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগও সম্প্রতি নয়াদিল্লিকে সতর্ক করে জানিয়েছে, আইএস-এর একটি অংশ ভারতে হামলার প্রস্তুতি শুরু করেছে। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত ভারত থেকে দুই ডজন যুবক সিরিয়া ও ইরাকে গিয়ে আইএসে যোগদান করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দারা বলেছেন, এক সময় নতুন নতুন এলাকা দখল করে ক্রমশ শক্তি বিস্তার করলেও গত কয়েক মাস ধরে আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশগুলির মার খেয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে এই জঙ্গি সংগঠন। একের পর এক এলাকা হাতছাড়া হচ্ছে তাদের। লাগাতার হামলায় প্রচুর যোদ্ধাও মারা পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপমহাদেশের মতো জনবহুল এলাকাকে যোদ্ধা সংগ্রহের জন্য টার্গেট করেছে আইএস। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ফেসবুক টুইটারের মতো সামাজিক সাইটগুলি থেকে জঙ্গিদের প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন মুসলিম যুবকদের বেছে নিয়ে তারা লাগাতার মগজ ধোলাইয়ের কৌশল নিয়েছে। তাদের কারো কারো সঙ্গে আইএস-এর আঞ্চলিক নেতারা ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগও করেছে। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে এই মুহূর্তে অন্তত পাঁচশ’ ভারতীয় যুবক আইএসে যোগ দিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আসা রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই যুবকদের বড় অংশের লক্ষ্য হল ইরাক-সিরিয়া-সহ পশ্চিম এশিয়ায় খিলাফত প্রতিষ্ঠা। তবে রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সব যুবকদের ক্ষোভ প্রধানত পশ্চিমা দেশগুলির একাধিপত্যের বিরুদ্ধে। ভারতীয় প্রশাসন বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে যে তারা জঙ্গি দলে যোগ দিতে চাইছেন বিষয়টি তেমন নয়। সংখ্যালঘু যুবকদের এই প্রবণতা কিছুটা হলেও ধন্দে ফেলেছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছে, শুরুর দিকে যে যুবকেরা সিরিয়া বা ইরাকে পাড়ি দিয়েছিল তাদের অধিকাংশ আগে থেকেই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, জইশ বা লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছিল। ধরপাকড়ের ভয়ে তারা বিদেশে পালিয়ে যায়। কিন্তু এখন যে যুবকেরা আইএসে যোগ দিতে চায় তাদের অনেকেরই কোনো জঙ্গি-যোগাযোগ নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সূত্রে খবর, সামাজিক সাইট’সহ যোগাযোগ মাধ্যমগুলির ওপর নিবিড় নজরদারি রেখেই গোয়েন্দারা নতুন এই প্রবণতার কথা জেনেছে। এ দেশ থেকে যারা আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে তাদের উপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালানো হচ্ছে। নজরদারিতে এমন তথ্য পাওয়া গেছেÑ হ্যান্ডলাররা যখন জানতে চাইছে ভারতীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তাদের কোনো ক্ষোভ রয়েছে কি না তখন অধিকাংশ মুসলিম যুবক বলেছেন, নেই। এবিপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন