আরব আমিরাতে দীর্ঘ বছর যাবত বাংলাদেশিদের নতুন নিয়োগ ভিসা বন্ধ থাকায় ভিজিট ভিসার সুযোগ নিয়ে আমিরাতে পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। দেশটিতে আসার পর শুধুমাত্র বিজনেস পার্টনার ভিসা লাগিয়ে বৈধ হওয়ার সুযোগ থাকলেও একশ্রেণির লোক তা কাজে না লাগিয়ে অথবা বিজনেস পার্টনার ভিসা লাগিয়ে বৈধ হওয়ার পরও নিজ প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অবৈধ হয়ে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছেন। এতে ভিজিট ভিসার অপব্যবহারে নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা।
জানা গেছে, ভিজিট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে আমিরাতে আসা কিছু লোকের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির লোক বিজনেস পার্টনার ভিসা লাগিয়ে দেয়ার নামে বাণিজ্য করে যাচ্ছে। এতে প্রতারিতও হচ্ছেন অনেকেই। আবার কতিপয় প্রতিষ্ঠানের মালিক ভিজিট ভিসায় আসা শ্রমিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পার্টনার ভিসা লাগিয়ে দিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে না রেখে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য ছেড়ে দিচ্ছেন। এতে পরিস্থিতির শিকারে ওই লোকগুলোর কিছুই করার থাকে না বিধায় বিজনেস পার্টনার ভিসা লাগানোর পরও বাধ্য হয়ে তাদেরকে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অবৈধ হয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
আবার একশ্রেণির লোক রয়েছেন যারা ভিজিট ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে ফিরে না গিয়ে অথবা ব্যয়বহুল খরচের কারণে বিজনেস পার্টনার ভিসা না লাগিয়ে অবৈধ হয়ে কাজ করছেন। যা এদেশটির শ্রম আইনে মারাত্মক অপরাধ। সূত্র মতে, আরব আমিরাতে ভিজিট ভিসায় আসা লোকদের মধ্যে অসংখ্য লোক বৈধ না হওয়ায় এবং মেয়াদ শেষে আমিরাত ত্যাগ না করায় বিষয়টি নজরে আসে দেশটির ইমিগ্রেশন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। এর ফলে ভিজিট ভিসা দেয়ার ক্ষত্রে আগের তুলনায় এখন অনেক সীমিত করে দিয়েছে আমিরাত সরকার। অপরদিকে অবৈধদের ধরপাকড় অভিযানও চালাচ্ছে। তবে ভিজিট ভিসার সুযোগ নিয়ে আমিরাতে যেভাবে বাংলাদেশি শ্রমিক পাড়ি জমাচ্ছেন এবং অবৈধ হয়ে কাজ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ছেন তাতে দেশটিতে বাংলাদেশিদের বন্ধ থাকা নতুন নিয়োগ ভিসা চালুর ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে বলেও মনে করেন সচেতন প্রবাসীরা।
এদিকে আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান এবং দুবাই ও উত্তর আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন খানসহ দূতাবাস ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমিরাতের আইন-কানুন মেনে চলার পাশাপাশি নিজ দেশের সুনাম বয়ে আনে এমন কাজ করার প্রতি প্রবাসীদের আহবান জানিয়ে আসছেন রীতিমতো। অথচ অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এ বিষয়টিকে তেমন আমলে নিচ্ছে না একশ্রেণীর বাংলাদেশি। তাছাড়া ২০১২ সালের আগষ্টে কেনইবা বাংলাদেশিদের নতুন নিয়োগ ভিসা বন্ধ করে দিল আমিরাত সরকার এ নিয়েও যেন কোন চিন্তা-ভাবনা নেই তাদের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন