এনএসজি ও এমটিসিআরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ফয়সালার মিশন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফর শুরু
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পঞ্চমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন নরেন্দ্র মোদি। মাত্র দুই বছরের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দুই দেশের বিপুল দূরত্ব অনেকটা মুছে ফেলছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আট বছরের শাসনকাল যখন শেষ লগ্নে তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন ওমাবার সঙ্গে বিদায়-বৈঠক করতে। মোদির এই যুক্তরাষ্ট্র সফর শুধু ওবামাকে বিদায় জানানোর জন্য নয়, তার সঙ্গে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে দুই দেশের মধ্যে। পরমাণু সরবরাহকারী দেশগুলোর জোট এনএসজিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ঠিক কোন পথে এগোনো হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে। মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম বা এমটিসিআর-এ ভারতের অন্তর্ভুক্তি এই সফরেই হয়ে যেতে পারে এমন আশা করা হচ্ছে। তা যদি হয় তাহলে অন্যান্য দেশে ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করতে এবং আমেরিকার কাছ থেকে প্রিডেটর ড্রোন কিনতে ভারতের সামনে আর কোনো বাধা থাকবে না। এমনকি মার্কিন যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদকরা ভারতে এসে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রও বানাতে পারবে।
এবার ওবামা এবং মোদি আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে থাকা মতানৈক্যগুলো অনেকখানিই কমিয়ে আনবেন বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বছরই প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার শেষ বছর। কাজেই শেষ মুহূর্তে মোদির এ সফর তার জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১২০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করায় আগ্রহী মোদির জন্যও এ সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া আজ বুধবার পঞ্চম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে মোদির ভাষণ দেওয়ার কর্মসূচি তার এ সফরের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৪ সালের মে মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক নতুন মোড় নেয়। এ সময়টাতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মোদি। এর পরপরই তার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এর আগে ভারতে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মোদিকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মার্কিন সরকার।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই শেষ বৈঠকের আগে মার্কিন সরকার বলছে, ‘২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির মধ্যে অসংখ্যবার ফোনে কথা হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই ছয়বার বৈঠক হয়েছে। মোদি গত সোমবারই জেনেভা থেকে রওনা হন আমেরিকার উদ্দেশ্যে। প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে তার বৈঠক হওয়ার কথা। তারপর হোয়াইট হাউসেই মধ্যাহ্নভোজ। এরপর মোদিকে সঙ্গে নিয়ে ওবামা পৌঁছবেন মার্কিন কংগ্রেসে। আমেরিকার জাতীয় আইনসভার দুই কক্ষেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন, যা এক বিরল সম্মান।
প্রসঙ্গত, পাঁচ দিনে পাঁচ দেশ ঝটিকা সফরের তৃতীয় পর্বে গত সোমবার সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর জেনেভা থেকে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন তিনি। ওয়াশিংটন সফরে তিনি দেশটির কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। দেশটিতে দুই দিন অবস্থান শেষে পাঁচ দেশ সফরের শেষ পর্বে তিনি ৮ জুন মেক্সিকো সফরে যাবেন। ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য হিন্দু, এবিপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন