একটানা প্রবল বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত ভারতের হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখন্ড রাজ্য। ২৪ ঘণ্টায় প্রবল বৃষ্টিপাতজনিত কারণে হিমাচল প্রদেশে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে আট জনের মৃত্যু হয়েছে বৃষ্টির কারণে তৈরি বন্যায়। প্রদশটির কুলু, সিরমাউর ও ছাম্বা এলাকায় দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া উনা ও লাহুল-স্পিতি জেলা থেকেও কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদিকে উত্তরাখন্ড রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি ও ভুমিধসে নিহত হয়েছে ২৪ জন। দুটি রাজ্যেই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। টানা বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশে ধস নেমে চন্ডিগড়-মানালি ও সিমলা-কিন্নাউর জাতীয় মহাসড়কসহ একাধিক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি হিসাব মতে, হিমাচল প্রদেশের ২৫০টিরও বেশি রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। টানা বৃষ্টিতে বানভাসি হয়েছে প্রদেশটির বিভিন্ন এলাকা। এসব কারণে আজ সোমবার কুলু ও সিমলার সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, ভারতে গত কয়েক মাসের ভারী বর্ষণজনিত বন্যায় মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ৯টি রাজ্যে এক হাজার ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় মৃতের সংখ্যা ১২১ জনে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কর্নাটকে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে মারা গেছে প্রায় হাজারখানেক গবাদি পশু। মহারাষ্ট্রে মারা গেছেন কমপক্ষে ৫৬ জন। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড ও পাঞ্জাব রাজ্যে বিদেশি নাগরিকসহ অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব রাজ্যে নিখোঁজ রয়েছেন কমপক্ষে আরও ২২ জন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রবিবার দিনভর ভারী বর্ষণের পর যমুনা ও সংলগ্ন অঞ্চলের অন্যান্য নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই উচ্চতায় উঠে আসে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এটি বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশে বন্যা সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। নিচু এলাকায় বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। বৃষ্টি কৃষকদের জন্য উপকারী হলেও প্রতি বছর অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় প্রাণহানির মতো ঘটনা সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়। আইওএল, স্ট্রেইট টাইমস, লাইভমিন্ট, ইন্ডিয়া টুডে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন