কাতারের রাজধানীতে চুক্তরাষ্ট্রের সাথে শান্তিচুক্তি সম্পাদনের ‘কাছাকাছি’ চলে গেছে তালেবানরা। তালেবান প্রতিনিধি এ তথ্য জানিয়েছেন। আফগানিস্তানের ১৮ বছরের যুদ্ধের ইতি টানার জন্য এই আলোচনা চলছে।
আল জাজিরার সাথে আলাপকালে দোহাতে তালেবানদের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন বলেন, নবম দফা আলোচনায় দুই পক্ষ চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছে। বুধবার সপ্তম দিনের মতো এই আলোচনা অব্যাহত ছিল। শাহীন আল জাজিরাকে বলেন, “আলোচনা আজও (বুধবার) বলছে এবং আমরা শেষ দফা ঐক্যমতের কাছাকাছি পৌঁছেছি”।
তিনি বলেন, “চূড়ান্ত বিষয় হলো চুক্তির বাস্তবায়ন এবং এ জন্য একটি মেকানিজম প্রতিষ্ঠা, যেটা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে”।
চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ও বিদেশী বাহিনীগুলো ধীরে ধীরে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে। এবং জবাবে তালেবানরা এই প্রতিশ্রুতি দেবে যে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে কোন বৈশ্বিক সন্ত্রাস চালানো হবে না।
দুই পক্ষ প্রধান এই দুটি বিষয়ে সম্মত হওয়ার পর স্থায়ী অস্ত্রবিরতি এবং আফগান সরকার ও তালেবানদের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির বিষয়ে আলাদা আলোচনা শুরু হবে, যেটাকে আফগান-অভ্যন্তরীণ সংলাপ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।
এ যাবত আফগান সরকারের সাথে আলোচনার বিষয়টি নাকচ করে এসেছে তালেবানরা। এবং তাদেরকে পশ্চিমের ‘পুতুল সরকার’ আখ্যা দিয়ে এসেছে তারা। গ্রুপটি বলেছে, কাবুলের সাথে কোন ধরনের আলোচনায় বসলে তাদেরকে স্বীকৃতি দেয়া হবে।
২০০১ সালে তালেবানদের উৎখাত করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট বাহিনী। আফগানিস্তানে ‘দখলদারিত্বের’ অবসানের জন্য বহুদিন ধরেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
তালেবানদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে, তারা আল কায়েদার যোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছে, যে গ্রুপটিকে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার জন্য দায়ি করা হয়।
এদিকে, সশস্ত্র গ্রুপগুলোর হামলা এবং আফগান বাহিনীর স্থল অভিযানো ও বিমান অভিযানে বেসামরিক আফগানদের হতাহতের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
চলমান শান্তি আলোচনায় অংশ নেয়ার পরও তালেবানরা দেশের মধ্যে বিশেষ করে আফগান বাহিনী ও সরকারী কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে। তবে এ সব হামলায় বহু বেসামরিক ব্যক্তিরাও হতাহত হয়েছে।
বুধবার, তালেবানরা দাবি করে যে, পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে তারা সরকার সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীর কমপক্ষে ১৪ সদস্যকে হত্যা করেছে।
চলতি বছর ভয়াবহ এক হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত হয় আরও বহু মানুষ আহত হয়। কাবুলে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ওই হামলা চালানো হয়েছিল। আইসিস ওই হামলার জন্য দায় স্বীকার করে।
গত মাসে প্রকাশিত জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আফগান ও মার্কিন বাহিনী ২০১৯ সালের প্রথমার্ধে গেরিলা বাহিনীগুলোর চেয়ে বেশি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে। সূত্র : এসএএম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন