বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

গণতন্ত্র মূল্যবান, পেয়েছেন যারা রক্ষার দায়িত্ব তাদেরই

শুধু বন্দুকের নলের মুখে নয়-২

দ্য ইকনোমিস্ট | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

তবে অতিরিক্তি মাত্রায় দোষারোপ বৈধতার জন্য সমস্যাজনক। বিরোধীদেরকে ট্রাম্প বোকা হিসেবে আখ্যায়িত করে ওয়াশিংটনের প্রতি তার ভোটারদের ক্ষোভ অনুমোদন করেন। ব্রিটেনের ব্রেক্সিটপন্থী ও বেক্সিট বিরোধীরা পরস্পরকে নীতিহীন বলছেন। শত্রুর সাথে সমঝোতা করার জন্য পরস্পরকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যায়িত করে রাজনীতিকে উগ্রপন্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার দোষারোপ করছেন।

ইতালির নর্দার্ন লীগের নেতা মাত্তিও সালভিনি অভিবাসীদের আশ্রয় কেন্দ্র সুবিধা কর্তনের মাধ্যম অভিবাসী বিষয়ক অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন যে অভিবাসীরা রাস্তায় বাস করলে তাতে অসন্তোষ বাড়বে।

ওরবান দেশের অর্ধেকেরও কম সংখ্যক ভোটারের ভোট পেয়েছেন। তারপরও তার হাতে সব ক্ষমতা। তিনি সে রকমই ব্যবহার করেন। তার বিরোধীদের গণতন্ত্রে কোনো স্বার্থ নেই এটা নিশ্চিত করে তিনি তাদেরকে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্রোধ প্রকাশ করতে উৎসাহিত করছেন।

বিদ্বেষী রাজনীতিকরা প্রতিষ্ঠানসমূহকে কালিমালিপ্ত করেন, তারপর তা লুণ্ঠন করেন। আমেরিকায় এ ব্যবস্থা সংখ্যালঘু ভোটারদের ক্ষমতা করায়ত্ত করতে দেয়। সিনেটে তা পরিকল্পনা মোতাবেক হয়। কিন্তু হাউজে তা হয় কূটকৌশল ও ভোটার-দমনের মাধ্যমে। আদালত যত বেশি রাজনীতিকীকৃত হচ্ছে, বিচারকদের নিয়োগ তত বেশি প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে। ব্রিটেনে বরিস জনসনের সংসদীয় চাতুর্য-কৌশল সংবিধানের স্থায়ী ক্ষতি করছে। তিনি আগামী নির্বাচনকে পার্লামেন্ট ও জনগণের মধ্যে একটি লড়াইয়ের রূপ দেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। রাজনীতিকে পেন্ডুলামের মত আচরণ করতে ব্যবহার করা হয়েছে। যখন দক্ষিণপন্থীরা ভুল করে তখন তাদের কাছে ক্ষমতা ফিরে আসার আগে বামপন্থীরা সুযোগ পায়। এখন তা আরো বিশৃঙ্খলাজনক হয়ে উঠেছে।

পরস্পরকে দোষারোপ প্রবণতা গণতন্ত্রকে নীচে নামিয়েছে। দলগুলো টুকরো টুকরো হচ্ছে ও উগ্রপন্থার দিকে এগোচ্ছে। পপুলিস্টরা ভোটারদের বোঝাচ্ছে যে এ ব্যবস্থা তাদের জন্য পীড়াদায়ক এবং আরো ক্ষতি করছে। অবস্থা খারাপ থেকে আরো খারাপ হচ্ছে।

গণতন্ত্রে ব্যাপক ধ্বংস আছে। লন্ডন বা ওয়াশিংটন কোনোটিই বুদাপেস্টের মত হতে যাচ্ছে না। ক্ষমতা অধিক বিস্তার লাভ করে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস যা এক কোটি মানুষের একটি দেশে নতুন কারো চেয়ে নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ কঠিন করে। বড় কথা, গণতন্ত্র নিজের নবায়ন করতে পারে। উইদারমেন ও ওয়াটারগেট আমলে আমেরিকার রাজনীতি পৃথক হয়ে যাওয়ার পর ১৯৮০ দশকে তা আবার সুস্থ হয়।

ঘৃণা প্রকাশের বিরুদ্ধে সে সব রাজনীতিকদের প্রত্যাঘাত শুরু হয় যারা আশাবাদী হয়ে ক্ষোভ পরিত্যাগ করেন। তুরস্কের শক্ত মানব প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান একরাম ইমামোগলুর অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে ইস্তান্বুলে মেয়র নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় বরণ করেন।

সকল পক্ষের এন্টি-পপুলিস্টদের স্লোভাকিয়ার নয়া প্রেসিডেন্ট জুজানা কাপুতোভার মত আইন-বলবৎকারীদের পিছনে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। রোমানিয়া, মলদোভা ও চেক প্রজাতন্ত্রের ভোটাররা ওরবানের পথের বিরোধিতাকারী নেতাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।

হংকং ও মস্কোতে রাস্তায় বিক্ষোভকারী তরুণদের সাহস হচ্ছে এক শক্তিশালী প্রদর্শনী যা পশ্চিমের বহু মানুষ ভুলে গেছেন বলে মনে হয়। গণতন্ত্র মূল্যবান, যেসব সৌভাগ্যবান তা পেয়েছেন তাদের সবাইকে তা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। (শেষ)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন