মার্কিন যুদ্ধজাহাজের কৃষ্ণ সাগরে প্রবেশে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি
ইনকিলাব ডেস্ক : ন্যাটো সম্মেলন শুরুর আগেই সামরিক মহড়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর উত্তেজনা বেড়েই চলছে। চলমান এ উত্তেজনায় নতুন মাত্রা দিয়েছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যদি কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন নৌ বাহিনীর জাহাজ প্রবেশ করে তাহলে কড়া জবাব দেবে রাশিয়া। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় আরআইএ বার্তা সংস্থার বরাত রয়টার্স জানায়, কিছু দিন নিয়মিত মোতায়েনের অংশ হিসেবে মার্কিন নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস পর্টার কৃষ্ণ সাগরে প্রবেশ করে। এ ডেস্ট্রয়ার থেকে কিছুদিন আগেই নতুন মিসাইল প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে মস্কো উদ্বিগ্ন। মার্কিন নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, ভূমধ্য সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর দুটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। জুলাইয়ে ন্যাটো সম্মেলনের আগে রাশিয়ার সামরিক কর্মকা-ের সঙ্গে পাল্লা দিতে এ শক্তি মোতায়েন করছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা আন্দ্রেই কেলিন ইউএসএস পর্টারের গতিবিধি সম্পর্কে বলেন, অবশ্যই এতে আমাদের অনুমোদন নেই। নিশ্চিতভাবেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেব আমরা। আন্দ্রেই জানান, সিরিয়া ও ইউক্রেনে রাশিয়ার ভূমিকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিজের শক্তি প্রদর্শন করতেই ভূমধ্যসাগরে বিমানবাহী যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করেছে। তিনি বলেন, এতে উভয় দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। ন্যাটো সম্মেলনকে সামনে রেখে ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্যে এসব করা হচ্ছে। কিছুদিন আগেই রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে ধরে ন্যাটোর ইতিহাসে সবচাইতে বড় যৌথ সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি দেশের ৩১ হাজারেরও বেশি সেনা অংশ নেন। মার্কিন, ব্রিটিশ, পোলিশ ও ন্যাটোভুক্ত দেশের সেনাদের অংশগ্রহণে পোল্যান্ডের সমুদ্র, স্থল ও আকাশপথে এ মহড়া চলে। মহড়াটির নাম দেয়া হয় আনাকোন্ডা সিক্সটিন। প্রায় ১২ হাজার পোলিশ, ১৪ হাজার মার্কিন এবং ১ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক এবারের মহড়ায় অংশ নেন। আসন্ন ন্যাটো সম্মেলনে পোল্যান্ড ও বাল্টিক দেশগুলোতে একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা মোতায়েন করার জন্য জোট নেতারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। খবরে বলা হয়েছিল, দু’বছর আগে ইউক্রেনকে বিচ্ছিন্ন করতে ক্রিমিয়া নিয়ে রাশিয়া আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছিলো। রাশিয়ার ওই অবস্থানকে মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে শক্তির জানান দিয়ে সদস্য দেশগুলোকে আশ্বস্ত করার চেষ্টার অংশ হিসেবে এই মহড়া আয়োজন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ন্যাটোর এমন শক্তির প্রদর্শনীতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, সীমান্তের এত কাছে ন্যাটো সেনারা অবস্থান নিলে সেটি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হিসেবে দেখা দেবে। লাভরভ বলেন, রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি ন্যাটো যে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, অন্য দেশগুলোকেও যে ধরনের সেনা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসছে এই বিষয়টিকে রাশিয়া মোটেই ভালোভাবে দেখছে না। এ মনোভাব প্রকাশ করতে রাশিয়ার কোন রাখঢাকও নেই। দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাশিয়ার সার্বভৌম অধিকার ও শক্তি রয়েছে বলে লাভরভ দাবি করেছেন। রয়টার্স, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন