উত্তর : বিরক্তিকর বা কষ্টদায়ক পর্যায়ে সালাম চলে না। কেননা সালাম অর্থ শান্তির বাণী। সালাম যেন অশান্তির কারণ না হয়। এজন্য শরীয়া অনেকগুলো ক্ষেত্রে সালাম দেয়া নিষেধ করেছে। ইবাদতের সময়, খাওয়া, অজু-ইস্তেঞ্জা, তেলাওয়াত, নিমগ্ন হয়ে পড়াশোনা, ধর্মীয় আলোচনা, ফাইল দেখা, লেখালেখি, একান্ত আলাপচারিতা, মিটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে মনোসংযোগ বিনষ্ট হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে সালাম না দিলেও চলে। দিলেও দোয়াস্বরূপ আস্তে দিতে হয়, যেন সালামপ্রাপ্ত ব্যক্তি সালামের জবাব দেয়ার বাধ্যবাধকতায় পতিত না হন। আমাদের দেশে অজ্ঞতা এত বেশি যে, যেখানে সালাম দেয়া সমীচীন নয়, সেখানে সালাম না দিয়ে তিনগুণ একটি বাক্য মানুষ বলে ফেলে। যেমন ‘খানা খাইতেছেন তো এজন্য সালাম দিলাম না’ অথবা ‘হুজুর মনে হয় ওজিফা বা মোরাকাবা করতেছেন, তাই সালাম দিলাম না’ কিংবা ‘মনে হয়, মনোযোগ দিয়ে কোনো ফাইল স্টাডি করছেন, কিতাব অধ্যয়ন করছেন, গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিয়ে ভাবছেন, তাই সালাম দিলাম না’। এসব অর্বাচীনের মতো কথা। এ ক্ষেত্রে সালাম না দেয়া আদব। বেশি হলে আস্তে সালাম দিয়ে ফেলবে। সালামপ্রাপ্ত ব্যক্তি কথা বলতে না চাইলে মনে মনে জবাব দিয়ে দেবেন। কিন্তু সালামের বদলে তার মনোযোগ নষ্ট করার মতো সালামের চেয়ে আরও দেড় হাত লম্বা একটি কথা বলা কোন যুক্তিতে পড়ে। তবে, হাদিস শরীফে আছে মুসলমান ভাইয়ের জন্য দোয়া, কল্যাণ কামনা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে যতবার দেখা হয়, ততবার অর্থাৎ বেশি বেশি সালামের প্রচলন কাম্য। উভয়ে এর রহমত, বরকত ও খোদায়ী নিয়ামত সমানভাবে অনুভব করলে এর প্রয়োগ অবশ্যই শান্তির কারণ। কেউ অস্বস্তিবোধ করলে একতরফা হাদিসের আক্ষরিক অর্থ নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের সালাম চালিয়ে গেলে, কারও কাছে একে সালামের অপব্যবহার বলে মনে হতে পারে। অধিক সালামের হুকুমের মর্ম বুঝে আমল করলে কারও অসুবিধা তো হওয়ার কথাই নয়, বরং স্বস্তির কারণ হতে পারে।
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতাওয়া বিশ্বকোষ।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন