বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত নারী ও হিজড়াদের ক্ষমতায়নের কাজ করবে ‘সবার জন্য সমতা’ এনজিও। এর প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কিসমা কামাল। মাত্র ২০ বছর বয়সেই তিনি এই এনজিওর যাত্রা শুরু করেন।
এ বিষয়ে কিসমা কামাল বলেন, ‘আমার এনজিও ‘সবার জন্য সমতা’ রাতারাতি শুরু হয় নি। বছরের পর বছর ধরে পরিকল্পনা, অগণিত নিদ্রাহীন রাত, নিউইয়র্ক থেকে হিউস্টনের বার বার যাওয়া আসা, মেয়রের কার্যালয়ের বাইরে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা, বিভিন্ন আইনজীবীর সাথে পরামর্শ, অবশেষে এগুলো সার্থক হয়েছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আমার এনএনজিও ‘সকলের জন্য সমতা’ এর জন্য কাজ শুরু করেছি। এই অলাভজনক সংস্থাটি বাংলাদেশের হাজার হাজার সুবিধাবঞ্চিত নারী ও হিজড়াদের ক্ষমতায়নের জন্য তাদের সাথে কাজ করবে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি হিজড়াদের ভোটাধিকার প্রদান করেছেন। এখন সময় এসেছে তাদের অন্যান্য অধিকার পাওয়ার।’
কিসমা আরো বলেন, ‘মেয়ে হিসেবে আবদ্ধ না থেকে আমি শৃঙ্খলা ভাঙতে চেয়েছি। নিজের একটি অলাভজনক সংস্থা এবং সমাজের সুবিধাবঞ্চিত এবং সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করা সবসময়ই আমার স্বপ্ন ছিল। আমার বয়স ২০ বছর। সদ্য কলিন কলেজে পড়া শেষ করে এখন দ্রুত ইউটিতে ঢোকার চেষ্টা করছি। আমি টেক্সাসে কিছু সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত।’
কিসমা কলিন কাউন্টির অস্ত্র বিরোধী সংগঠন ‘স্টুডেন্ট ডিমান্ড এ্যাকশন’ এর সহ-সভাপতি এবং ডালাস টেক্সাস অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের ক্ষমতায়নে কাজ করা একটি সংগঠনের সদস্য। ১৭ বছর বয়সে, তিনি নিউইয়র্ক হেলথ ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের সাথে কাজ করেছেন। তিনি জানান, ‘আমি বিগত ৩ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই রাজ্যে থাকলেও আমার হৃদয় সবসময় বাংলাদেশে ছিল। আমি আশা করি ‘সবার জন্য সমতা’ বাংলাদেশে একটি পার্থক্য আনবে। আমি আমার ফ্যাশন লাইন ‘কিসমা কামাল অফিসিয়াল’ এর কাজ শুরু করেছি যা আমার এনজিও’র সাথে অনুমোদিত। সব ধরণের মহিলাদের গ্রহণ করার জন্য আমাদের সংস্কৃতিতে একটি অবস্থান তৈরি করতে এটি কাজ করবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে সুন্দর। সকলেই স্বতন্ত্র এবং এটাই তাদের সুন্দর করে তোলে। এটি এখানে মহিলা এবং ট্রান্সজেন্ডারদের ক্ষমতায়নের জন্য। আমি ইতিমধ্যে আমার ডিজাইনগুলি নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এছাড়াও, আমার প্রথম ট্রান্সজেন্ডার কর্মী নিয়োগ করেছি। হ্যাঁ, আপনি ঠিক পড়েছেন, প্রথম ট্রান্সজেন্ডার কর্মী।’
‘কিসমা কামাল অফিসিয়াল’ এর সিইওর প্রতিনিধিত্ব করবে। পোষাকগুলি পূর্ব এবং পশ্চিম উভয়ের সংমিশ্রণ হতে চলেছে, তবে এগুলো শালীন হবে। এগুলো তাদেরকেই চিত্রায়িত করবে যারা পশ্চিমাধর্মী হলেও চরিত্রের মান এবং বিশ্বাসে স্থির থাকেন। ‘কিসমা কামাল অফিসিয়াল’ সমাজে একটি পরিবর্তন আনবে বলে বিশ্বাস করেন কিসমা। তার দাবি, এটি প্রত্যেকের জন্য সমাজকে সুন্দর করতে এসেছে এবং বাংলাদেশের সৌন্দর্যের পুরোনো ধ্যান ধারণা ভেঙে দেবে। তিনি বলেন, ‘আমাকে সমর্থন করার জন্য আমি প্রথমে আমার মাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার প্রিয় দাদু, এটি আপনার জন্য। আমি আপনার জনহিতকর কাজে সর্বদা অনুপ্রাণিত হয়েছি। এছাড়াও, আমার বাবা এম এইচ কামাল, যিনি আমার সবচেয়ে বড় রোল মডেল ও একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও আমার চাচা এম পি বি এইচ হারুন, যিনি সবসময় আমার কাছে একজন পিতার মতো ছিলেন, তাদেরকেও ধন্যবাদ দিতে চাই। আমার বন্ধু, পরিবার এবং শিক্ষক যারা আমার উপর ভরসা রেখেছিলেন, সবাইকে ধন্যবাদ।
আমার অনেক বড় বড় পরিকল্পনা রয়েছে এবং আমি সবগুলো অর্জন করার আশা করি। সকলের প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ, দয়া করে আমাকে এবং আমার দলের জন্য দোয়া করবেন। আমার, আমাদের এবং সকলের জন্য সমতা।’
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে ‘সবার জন্য সমতা’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। সকাল ১১টা থেকে সন্ধা ৮টা পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি চলবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন