ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ইস্যুটি নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে আলোচনা পর এবার ভারত সফরে আসছেন এশিয়ার পরাশক্তি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
আগামী শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুই দিনের এক রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন তিনি। যেখানে চীনা প্রেসিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হবেন। যেখানে ভারত ও চীনের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে। যদিও এবার তাদের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে না বলে এরই মধ্যে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাতে জানিয়েছে গণমাধ্যম ‘এনডিটিভি’।
এ দিকে বর্তমানে চীন সফরে রয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যুতে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর জন্য পাক প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান চীনা প্রেসিডেন্ট। বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি অধিকৃত কাশ্মীরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে পাক সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেব।’
সদ্য সমাপ্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে চীন-পাকিস্তানের বর্তমান সম্পর্কের স্মরণ করায় জিনপিং পাক প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। জবাবে ইমরান খান বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কখনোই এমন কিছু করেনি চীন। তাছাড়া ইসলামাবাদকে কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই বারংবার সাহায্য করেছে বেইজিং।’
অপর দিকে সংশ্লিষ্টদের মতে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আগামী ১১-১২ অক্টোবর ভারতের চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠেয় এক বৈঠকে অংশ নেবেন। এ সময় তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও কাশ্মীরসহ আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও নয়াদিল্লি থেকে অনেক আগেই ইস্যুটি সম্পূর্ণই ভারতের নিজস্ব একটি বিষয় বলে দাবি করা হয়েছে। তাই এবার হয়তো চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিষয়টি নিয়ে কথা নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়। এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান ও এশিয়ার পরাশক্তি চীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন