শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইউরোপিয়ানদের চেয়ে মার্কিনিরা মুসলমানদের বেশি পছন্দ করে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের বাসিন্দাদের মধ্যে মুসলিম এবং ইসলাম সম্পর্কে ভিন্ন মতামত রয়েছে। দুই এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দারাই বলেছেন যে, তারা মুসলমানদের প্রতিবেশী হিসাবে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক এবং তাদের বেশিরভাগই পরিবারের সদস্য হিসাবে একজন মুসলমানকে মেনে নিতে প্রস্তুত। অ-মুসলিম আমেরিকান এবং পশ্চিম ইউরোপীয়রা কীভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের দেখে তার ভিত্তিতে ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার গত মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানেই এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পিউ রিসার্চ কর্তৃক পরিচালিত গবেষণায় আটলান্টিকের উভয় পারের বাসিন্দাদের মতামত নেয়া হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের ১৫ টি দেশ জুড়েই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বলেছে যে, মুসলিম প্রতিবেশী থাকা এমন একটি বিষয় যা তারা মেনে নিতে ইচ্ছুক। তবে কিছু দেশের বেশিরভাগ বাসিন্দাই মুসলিমদের প্রতি বিরুপ মনোভাব প্রকাশ করেছে।
পশ্চিম ইউরোপ বনাম যুক্তরাষ্ট্র: পিউ রিসার্চের সাক্ষাৎকারে অমুসলিম আমেরিকানদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ বলেছেন যে, তারা প্রতিবেশী হিসেবে মুসলিমদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক। তাদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ বলেছেন যে, পরিবারে একজন মুসলমানকে স্বাগত জানাতে তাদের কোনও সমস্যা নেই। এই পরিসংখ্যান সম্পর্কে অবাক করা বিষয়টি হলো, আমেরিকানরা পশ্চিম ইউরোপীয়দের চেয়ে মুসলমানদের গ্রহণে বেশি আগ্রহী। প্রকৃতপক্ষে, মুসলমানদের নিয়ে পশ্চিম ইউরোপের লোকদের আলাদা ধারণা রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সেখানে মুসলিম প্রতিবেশীদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুকদের সংখ্যা কিছুটা কম। পরিবারেও মুসলমানদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুকদের সংখ্যা সেখানে আরও কম। উদাহরণস্বরূপ ফ্রান্সে, পিউ’র গবেষণায় উত্তরদাতাদের মধ্যে কেবল ৬৬ শতাংশ মুসলমানদের পরিবারের সদস্য হিসাবে গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যে এমন লোকেরা সংখ্যা আরও কম। সেখানে কেবলমাত্র ৫৩ শতাংশ ইতিবাচক মত দিয়েছে। অস্ট্রিয়ানদের মধ্যে এই প্রবনতা ৫৪ শতাংশ, জার্মানদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ এবং ইতালীয়দের মধ্যে ৪৩ শতাংশ।
কিন্তু এই লোকেরা কেন মুসলমানদেরকে তাদের পরিবারে তাদের থাকতে দিতে অস্বীকার করে? পিউ রিসার্চ অনুসারে, শিক্ষার সাথে এটি সম্পর্কিত হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, পিউ রিসার্চ লক্ষ্য করেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপ উভয় জায়গাতেই মুসলমানদের গ্রহণযোগ্যতা উচ্চ শিক্ষিত লোকদের মধ্যে বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে যারা কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়নি এমন নাগরিকদের তুলনায় কলেজ ডিগ্রি প্রাপ্তরা মুসলমানদের পরিবারের সদস্য হিসাবে গ্রহণ করতে বেশি আগ্রহী। কলেজ ডিগ্রি প্রাপ্তদের মধ্যে শতকরা ৭৫ শতাংশ মুসলমানদের মেনে নিতে আগ্রহী। পশ্চিম ইউরোপে মোটামুটি একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। সেখানেও তুলনাম‚লকভাবে কলেজ ডিগ্রি প্রাপ্ত বেশিরভাগ লোকই তাদের পরিবারে একজন মুসলমানকে গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। জার্মানি উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ ও অল্প শিক্ষিতদের মধ্যে ৫২ শতাংশ মুসলমানদের গ্রহণ করতে আগ্রহী। যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রিয়া এই পরিসংখ্যান যথাক্রমে ৭১ ও ৪৪ শতাংশ এবং ৬৭ ও ৫১ শতাংশ।
পিউ রিসার্চ এই মতভেদ রাজনীতি এবং জনসংখ্যার ভিত্তিতেও ব্যাখা করার চেষ্টা করেছে। রাজনীতির ভিত্তিতে পিউ রিসার্চের গবেষণায় দেখা গেছে, পশ্চিম ইউরোপে যারা ইউরোপীয় রাজনীতির ডানপন্থা অনুসরণ করেন তারা বামপন্থীদের তুলনায় মুসলমানদের গ্রহণ করতে কম আগ্রহী। একই বিষয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও আসে, সেখানে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে যারা তাদের সমর্থন করেন তাদের ৮৮ শতাংশ পরিবারের সদস্য হিসেবে মুসলমানদের মেনে নিতে প্রস্তুত। কিন্তু রিপাবলিকানদের মধ্যে এই সংখ্যা মাত্র ৬৭ শতাংশ।
আবার নিজেদের সংস্কৃতি ও ম‚ল্যবোধের সাথে তুলনা করে তারা কীভাবে ইসলামকে দেখেছে তার সাথেও এই মতভেদ সম্পর্কিত হতে পারে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের বেশিরভাগ মানুষই মুসলমানদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক, কিন্তু তারা ইসলাম সম্পর্কে মিশ্র অনুভ‚তি রাখে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইসলাম ধর্মকে পাশ্চাত্যের মতো জীবনধারা ও ম‚ল্যবোধের সাথে সঙ্গতিপ‚র্ণ হিসাবে দেখেন না। প্রকৃতপক্ষে, প্রায় অর্ধেক আমেরিকান বলেছেন যে, ইসলাম ম‚লধারার আমেরিকান সমাজের অংশ নয়, তাদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ বলেছেন যে, ধর্মটি তাদের গণতন্ত্রের সাথে বেমানান। একইভাবে জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে সহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশেও প্রায় অর্ধেক জনগণই এমন ধারণা পোষণ করেন। সূত্র : ইন্টারনেট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
llp ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৩৬ এএম says : 0
What's the purpose of this research. How well the campaign against a particular belief system over the last 50 years worked? The result is not so impressive. This means European and American scholars of the targeted belief system have done a good job.
Total Reply(0)
Alyssa Islam Toha ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৪১ এএম says : 0
It's a very good news for us
Total Reply(0)
Niloy Khan ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৪২ এএম says : 0
মুসলমানরা ভালো তাই সবাই তাদের পছন্দ করে।
Total Reply(0)
Kamal ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৪২ এএম says : 0
আল্লাহ তুমি সারা বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি রহমত নাযিল করো।
Total Reply(0)
Harunur Rashid ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:৪৩ এএম says : 0
নিউজটি পড়ে খুব ভালো লাগলো
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন