ভূমধ্যসাগরে আরো একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন
ইনকিলাব ডেস্ক : রাশিয়ার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ টহল ও উপস্থিতি অব্যাহত রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সেক্রেটারি জানিয়েছেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন থাকবে। চলতি মাসের শুরুতে কৃষ্ণ সাগরে অবস্থান নেয় মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস পর্টার। এরপর থেকেই এ ঘটনার নিন্দা ও সমালোচনা করে আসছে রাশিয়া। এছাড়া আগামী মাসে ন্যাটো সম্মেলনকে সামনে রেখে তুরস্ক ও রোমানিয়াও কৃষ্ণ সাগরে শক্তি বৃদ্ধি করবে বলে খবরে বলা হয়েছে। এদিকে, গত বৃহস্পতিবার ভূমধ্যসাগরে আরো একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।
কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতির বিষয়ে মার্কিন নৌবাহিনীর সেক্রেটারি রে ম্যাবুস জানান, আমরা সেখানে থাকব। আমরা ভয় দেখিয়ে নিবৃত করতে চাই। সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে এবং ভয় দেখানোর জন্যই আমরা কৃষ্ণ সাগরে অবস্থান করছি। আর এটাই হলো প্রধান কারণ। এছাড়া অন্য কিছু নেই। উল্লেখ্য, কৃষ্ণ সাগরে স্থায়ী সেনা মোতায়েনের জন্য ন্যাটোতে আলোচনার প্রেক্ষিতে রাশিয়ার সমালোচনার পরই কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি অব্যাহত রাখার এ ঘোষণা দিলেন ম্যাবুস। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আন্দ্রেই কেলিন বলেছিলেন, স্থায়ী সেনা মোতায়েন করলে এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। কারণ এটা ন্যাটোর কোনো সাগর নয়।
২০১৪ সালে ইউক্রেনকে ভেঙ্গে ক্রিমিয়াকে আলাদা করে রাশিয়া। এবং কৃষ্ণ সাগরের সেভাস্তোপলে রাশিয়ার একটি নৌবহর রয়েছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। কিছুদিন আগেই রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে ধরে ন্যাটোর ইতিহাসে সবচাইতে বড় যৌথ সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি দেশের ৩১ হাজারেরও বেশি সেনা অংশ নেন। মার্কিন, ব্রিটিশ, পোলিশ ও ন্যাটোভুক্ত দেশের সেনাদের অংশগ্রহণে পোল্যান্ডের সমুদ্র, স্থল ও আকাশপথে এ মহড়া চলে। মহড়াটির নাম দেয়া হয় আনাকোন্ডা সিক্সটিন। প্রায় ১২ হাজার পোলিশ, ১৪ হাজার মার্কিন এবং ১ হাজার ব্রিটিশ সেনা এবারের মহড়ায় অংশ নেন। আসন্ন ন্যাটো সম্মেলনে পোল্যান্ড ও বাল্টিক দেশগুলোতে একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা মোতায়েন করার জন্য জোট নেতারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বিবিসির খবরে বলা হয়েছিল, দু’বছর আগে ইউক্রেনকে বিচ্ছিন্ন করতে ক্রিমিয়া নিয়ে রাশিয়া আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছিল। রাশিয়ার ওই অবস্থানকে মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে শক্তির জানান দিয়ে সদস্য দেশগুলোকে আশ্বস্ত করার চেষ্টার অংশ হিসেবে এই মহড়া আয়োজন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ন্যাটোর এমন শক্তির প্রদর্শনীতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, সীমান্তের এত কাছে ন্যাটো সেনারা অবস্থান নিলে সেটি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হিসেবে দেখা দেবে। লাভরভ বলেন, রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি ন্যাটো যে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, অন্য দেশগুলোকেও যে ধরনের সেনা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসছে এই বিষয়টিকে রাশিয়া মোটেই ভালোভাবে দেখছে না। এ মনোভাব প্রকাশ করতে রাশিয়ার কোনো রাখঢাকও নেই। দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাশিয়ার সার্বভৌম অধিকার ও শক্তি রয়েছে বলে লাভরভ দাবি করেছেন। রয়টার্স, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন