সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে আরব বিশে^র চিন্তা-ভাবনা

প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : আসন্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে আরব বিশ^। বেশির ভাগ আরব পর্যবেক্ষক মনে করেন, পরবর্তী মার্কিন নেতা এ অঞ্চলের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনবেন। তারা এটাও মনে রাখছেন, সাম্প্রতিক ওরল্যান্ডো হত্যাকা- মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উপর প্রভাব ফেলবে। ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডোর একটি নাইটক্লাবে ওমর মতিন ৪৯ জনকে হত্যা করেছিল। তিনি নিজে সমকামী হতে পারেন, কিন্তু একই সঙ্গে তিনি আইএসের সাথেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
কয়েক সপ্তাহ আগেও হিলারি ক্লিনটনের বিজয়ের ব্যাপারে ডেমোক্রেটরা আত্মবিশ^াসী ছিল। তাদের ধারণা ছিল, রিপাবলিকান দলীয় ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে ইসলামবিরোধী বক্তব্য দিয়ে মুসলমানদের ক্ষেপিয়ে তুলেছেন, তাতে দৈব কিছু না ঘটলে হিলারির জয় নিশ্চিত। কিন্তু ওরল্যান্ডোর ঘটনা এখন সরাসরি ট্রাম্পের পক্ষে চলে গেছে। ট্রাম্প এখন এটিকে কাজে লাগাতে পারেন। মুসলিম ও আরব রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা এখন লক্ষ রাখছেন, ওই নির্বাচন কীভাবে মধ্যপ্রাচ্যের উপর প্রভাব ফেলে। গত আট বছরে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির ব্যাপারে বেশির ভাগ আরবই খুশি ছিলেন না। তারা এটা অনুধাবন করেছেন, প্রেসিডেন্ট ওবামা এ অঞ্চলের সমস্যা নিরসনের ধারে কাছেও ছিলেন না। বিশেষ করে সিরিয়া যুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট খুব রুঢ়ভাবে অংশ নিতে চেয়েছিলেন।
মিসরীয় বিশ্লেষক ও ওয়াশিংটন ভিত্তিক আল-আরাবি টিভি নেটওয়ার্কের ব্যুরো প্রধান মোহামেদ এলমেনশোয়ে বলেন, নির্বাচনের পর এক্ষেত্রে কৌশলগত পরিবর্তন আসতে বাধ্য। তিনি বলেন, হিলারি ক্লিনটন বিজয়ী হলে তিনি বারাক ওবামার চেয়ে ভিন্ন কিছু নীতি গ্রহণ করবেন। বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন। এলমেনশোয়ে বলেন, সশস্ত্র জিহাদিদের ব্যাপারে তিনি যে নরম মনোভাব পোষণ করবেন, এটা ভাবাও ঠিক হবে না। তবে তিনি খুব বেশি কঠোরও হবেন না। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে কি হতে পারে, সে ব্যাপারে ভবিষ্যৎ বাণী করতে গিয়ে তিনি বলেন, ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত অনেক মন্তব্য করেছেন, তাই ভবিষ্যতে তার দৃষ্টিভঙ্গিতে কি ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে, সে ব্যাপারে মন্তব্য করা একটু কঠিনই। সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি পশ্চিমাদের সমর্থনের ব্যাপারে ট্রাম্প বলেছিলেন, সেটা হবে ওই অঞ্চলের জন্য আরও নৈরাজ্যকর। তিনি আরও বলেছিলেন পশ্চিমারা লিবিয়া ও ইরাকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। তিনি এও বলেছিলেন, যদি আসাদ সরকারে পতন ঘটে, তবে সিরিয়ারও একই দশা হবে। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সকল সিরীয় শরণার্থীকে ফেরত পাঠাবেন। ট্রাম্প ইরাক থেকে মার্কিন সৈন্য সরিয়ে আনারও সমালোচনা করে বলেন, মজুদ তেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক থেকে কখনোই সৈন্য সরিয়ে আনা ঠিক হবে না। কিন্তু সৈন্য ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং এখন সব তেল চলে গেছে ইরান ও আইএসের হাতে, যা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকা-ে ব্যাপক অর্থ যোগায়। সবকিছু মিলিয়ে উপসাগরীয় দেশগুলো হিলারি ক্লিনটনের বিজয়ই আশা করে। ডেমোক্রেট দলীয় এই প্রার্থীর পক্ষেই সবাই কথা বলে। দুবাই’র রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আব্দুল খালেক আব্দুল্লা বলেন, ট্রাম্পকে পছন্দ করি না। হিলারির পররাষ্ট্র নীতির ব্যাপারে অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তার অবস্থান স্পষ্ট।
আব্দুল্লা বলেন, কিছু ক্ষেত্রে সামরিক পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করায় ওবামার পররাষ্ট্র নীতি কিছুটা সমালোচিত। ইরান এবং কিউবার ব্যাপারে ওবামা সংস্কারের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, একই সাথে ওবামা ওয়াশিংটনের পুরনো বন্ধুদের থেকে দূরে সরে গেছেন। কে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন, তা কোনো বিষয় না। আব্দুল্লা মনে করেন, নতুন প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র নীতি বর্তমান প্রেসিডেন্টের চেয়ে অনেক ভালো হবে, যা ওয়াশিংটন ও আরব বিশে^র মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবে। এলমেনশোয়েও মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র-আরব সম্পর্ক ভালো হওয়া উচিত। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দশক ধরে আরব দেশগুলোতে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে এবং মনে হয় না তা ভবিষ্যতে পরিবর্তন হবে। ডিডব্লিউ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন