সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিটের পক্ষের লোকদের নিয়ে নতুন সরকার গঠনের উদ্যোগ

প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : গণভোটের ফলাফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শুক্রবারই ব্রেক্সিট সরকারের প্রশ্নটি সামনে নিয়ে আসেন ইইউ-বিরোধী ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টির (ইউকিপ) নেতা নাইজেল ফরাজ। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার পক্ষেই বেশি ভোট পড়ায় এখন দেশটিতে ব্রেক্সিট সরকার থাকা উচিত। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের পদত্যাগের পর সেই ব্রেক্সিট সরকার গড়ারই স্বপ্ন দেখছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা বরিস জনসন এবং মাইকেল গোভ। গভকে সঙ্গে নিয়ে এবার জনসন সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবেন। জানা গেছে, গভকে নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে ভাবা হচ্ছে। তবে সিএনএন জানাচ্ছে, পুরনো অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন নাকি বরিস জনসনকে মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়েছেন। সে হিসেবে নতুন সরকারে দুই অর্থমন্ত্রী যৌথভাবে কাজ করবেন এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এই খবর নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, যে কনজারভেটিভরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে (ব্রেক্সিট পক্ষ) ছিলেন তাদের নিয়েই নতুন সরকার গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরেও বরিস জনসনকে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী বলা হয়েছে।
গণভোটের ফলাফল ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার বিপক্ষে যাওয়ায় গত শুক্রবার সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাসভবন ১০ নং ড্রাউনিং স্ট্রিটে গণভোটের ফলাফল নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ব্রিটিশ জনগণের জন্য এখন নতুন নেতৃত্ব দরকার। যুক্তরাজ্যের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পালনকে গৌরবের মন্তব্য করে আবেগাক্রান্ত ক্যামেরন বলেন, এই জাহাজ এখন একজন নতুন নাবিকের জন্য অপেক্ষা করছে। আসছে অক্টোবরের দলীয় সম্মেলনে নতুন প্রধানমন্ত্রী খুঁজে নেয়া হবে বলে জানান তিনি। ব্রেক্সিটের প্রতিক্রিয়ায় পাউন্ডের মূল্যমান ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছায়। সঙ্কট মোকাবেলায় বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ঘোষণা দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আরেকটি গণভোটের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার দাবি তোলে স্কটল্যান্ড। আর এরই বিপরীতে, কে নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন সেই প্রশ্নে কনজারভেটিভ দলে শুরু হয় গুঞ্জন। তবে ডেভিড ক্যামেরনের পদত্যাগেরও আগেই যেন নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ভাবতে শুরু করেন লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন। গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে জনতার রায় যাচ্ছে এমনটা জানার পরপরই একজন রাষ্ট্রপ্রধানের স্টাইলে বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। কথা বলেছেন ব্রিটেনের জাতীয় ঐক্য ও ভবিষ্যত নিয়ে। বিবৃতিতে তিনি মন্তব্য করেন, গণভোটের ফলাফলকে ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্নতা হিসেবে দেখা যাবে না। তিনি মন্তব্য করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার মানে ইউরোপীয় ভাবধারা থেকে বের হয়ে আসা নয়। গণভোটের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, যারা মনে করছেন, ব্রেক্সিটের কারণে আমাদের ঐক্য কমে যাবে কিংবা আমরা ইউরোপীয় ভাবধারা থেকে দূরে সরে যাব, তারা ঠিক ভাবছেন না। ইউরোপ আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে পার্থক্য টেনে তিনি বলেন, আমরা ইউরোপের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই সম্পর্ক প্রবাহিত হতে থাকবে। এদিকে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরেও বলা হয়েছে, নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসনের কথাই ভাবা হচ্ছে। গার্ডিয়ান বলছে, এমপিরা দুইজনের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন, যেখানে অন্তত ১ জন হবেন ব্রেক্সিটপন্থী। পরবর্তীতে পার্টির তৃণমূল নেতৃত্ব ভোটের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেবেন। উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ। আর ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট পড়েছে ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ। গার্ডিয়ান, সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন