শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঠেকিয়ে দিয়েছে ব্রিটেনের গণভোট : বিশ্লেষণ

প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর মাধ্যমে বিশ্বে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা
করতে চায়, ভেঙে যেতে পারে ন্যাটো জোটও
ইনকিলাব ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার কারণে ২৮ জাতির এই জোট ভেঙে যাচ্ছে। আর খুব দ্রুত এই জোট ভেঙে গেলে মার্কিন নেতৃত্বে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করা কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঠেকিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে। ইরানের প্রেস টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন সাবেক রিগ্যান প্রশাসনের সহকারী অর্থমন্ত্রী এবং মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক পল ক্রেইগ রবার্টস। গণভোটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার একদিন পর গত শুক্রবার এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক এমন তির্যক মন্তব্য করলেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এসোসিয়েট এডিটরকে ক্রেইগ রবার্টস সাক্ষাৎকারে আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর মাধ্যমে বিশ্বের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। রবার্টস বলেন, আশা করা যায়, ব্রেক্সিটের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভেঙে যাবে এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটও ভেঙে যেতে পারে। বড় দেশ হিসেবে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার সাহস দেখিয়েছে। ফলে গ্রিস, পর্তুগাল, স্পেন ও ইতালির মতো যেসব ছোট দেশ শোষণের শিকার, তারাও জোট থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য ভোট দিতে পারে। পল ক্রেইগ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন হচ্ছে একটি স্বৈরতন্ত্র; সেখানে কোনো গণতন্ত্র নেই। তাদের একটি পার্লামেন্ট আছে, কিন্তু তার কোনো ক্ষমতা নেই। ক্ষমতা রয়েছে অনির্বাচিত কমিশনের হাতে, যারা সব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে। ফলে ইউরোপের জনগণ থেকে সরকারগুলোকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। মার্কিন এ বিশ্লেষক পরিষ্কার ভাষায় বলেন, জনগণের জন্য ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। গ্রিসের মতো দরিদ্র দেশকে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের ব্যাংকগুলো লুট করেছে। তার মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থাকার কারণেই ন্যাটো এত শক্তিশালী। ব্রেক্সিটের কারণে এখন ন্যাটোও ভেঙে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এই ন্যাটোকে ব্যবহার করে আফগানিস্তান, লিবিয়া ও ইরাক ধ্বংস করেছে। সিরিয়াকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এসব করতে সক্ষম হয়েছে একমাত্র ন্যাটোর কারণে। তিনি বলেন, ন্যাটো যদি ভেঙে যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন চালানোর দিন শেষ হয়ে আসবে এবং ওয়াশিংটন কোনোভাবেই ইউরোপের দেশগুলোকে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে দিতে পারবে না। এসব কারণে বলা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গিয়ে ব্রিটেন মানবসভ্যতাকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি থেকে আপাতত রক্ষা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে রাশিয়া, চীন ও ইরানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এখনই ওয়াশিংটন সেই লক্ষ্য থেকে সরে আসবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো ভেঙে গেলেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রের হতাশ হয়ে পিছু হটবে। সে কারণে লড়াই শেষ হয়ে যায়নি। পল ক্রেইগ বলেন, ব্রিটেন বেরিয়ে আসার কারণে এখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংক অব জাপান এবং জর্জ সরোস একযোগে ব্রিটিশ অর্থনীতি ও পাউন্ডের ওপর হামলা চালাতে পারে এবং এই অর্থ সন্ত্রাসের মাধ্যমে ব্রিটেনের জনগণকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে, আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যথেষ্ট ভুল করে ফেলেছি। তাই নতুন করে আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়া যেতে পারে। প্রেস টিভি, পার্স টুডে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন