শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ব্রেক্সিটের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক চিঠি না পাওয়া পর্যন্ত আলোচনা নয়

প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগের প্রক্রিয়া শুরু না করা পর্যন্ত ব্রেক্সিট নিয়ে যে কোনো ধরনের আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে জার্মানি। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁাঁসোয়া ওঁলাদ এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি গত সোমবার বার্লিনে এক বৈঠকে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। নিয়ম অনুযায়ী ইইউ ত্যাগের জন্য যুক্তরাজ্যকে লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি (৫০ নস্বর উপধারা) কার্যকর করতে হবে। এর আওতায় বিচ্ছিন্নতা নিয়ে আলোচনা চলবে কিন্তু কীভাবে সদস্যপদ বাতিল করা হবে সে বিষয়ে আলোচনার জন্য দুই বছর সময় থাকবে। এর আগে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন বলেছেন, ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে ২০০৭ সালের লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি এখনই কার্যকর করবে না ব্রিটেন। কিন্তু মারকেল বলেছেন, বেশিরভাগ ব্রিটিশ ইইউ ত্যাগের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ইইউ’র কাছে বিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের আনুষ্ঠানিক আবেদন না করা পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না। তিনি বলেন, ওই বার্তাটি আসার পর সেটি বিবেচনা করার কাজ রয়েছে। তবে এর জন্য আমাদের দীর্ঘদিন অপেক্ষা করাও উচিত হবে না। কেননা অনির্দিষ্টকালের জন্য এ অচলাবস্থা চলতে পারবে না।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের সদস্যপদের ব্যাপারে দ্বিতীয় দফায় গণভোটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এ অবস্থানের কথা নিশ্চিত করেছেন তার মুখপাত্র। এর আগে ব্রেক্সিট ইস্যুতে দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে খোলা পিটিশনে স্বাক্ষর করেন ৩১ লাখেরও বেশি ব্রিটিশ নাগরিক।
গত বৃহস্পতিবার গণভোটের আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন দ্বিতীয় গণভোটের ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি। তবে তা সত্ত্বেও ইইউতে থাকার পক্ষের একদল কর্মীর খোলা ওই পিটিশনটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পিটিশনটি খোলা হয় শুক্রবার।
বৃহস্পতিবারের গণভোটে ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট দেন ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ ব্রিটিশ। আর ছাড়ার পক্ষে ভোট দেয় ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ।
অন্যদিকে, ব্রিটেনকে অনতিবিলম্বে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। সেই সঙ্গে পদত্যাগের ঘোষণা দেয়া ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকেও দ্রুত পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার আহ্বান জানায় সংগঠনটি। ব্রিটেনে গত বৃহস্পতিবারের (২৩ জুন) গণভোটে ইইউ ত্যাগের সিদ্ধান্ত বা ব্রেক্সিট জয়ী হওয়ার পর ইইউর ছয় প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই আহ্বান জানান। তাদের মতে, এখন ব্রিটেন যত দেরি করবে, তত সমস্যা বাড়বে। ওদিকে জোটটিতে থাকা অন্যান্য দেশগুলো যেন জোট থেকে চলে না যায়, সে ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণেরও আহ্বান জানান তারা। গণভোটের দুদিন পর, শনিবার জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি, বেলজিয়াম, লাক্সেমবার্গ ও নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বার্লিনে এক জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। এরপরই ওই ঘোষণা প্রদান করা হয়। জরুরি এই বৈঠক থেকে ব্রিটেনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, ইইউর সঙ্গে আলোচনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেরে ফেলার জন্যে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টেইনমেয়ার বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। কারণ তাদেরকে ইউরোপের ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মারকেল বলেন, বেরিয়ে যাওয়ার জন্যে ব্রিটেনের তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। আবার এই প্রক্রিয়া চিরকালের জন্যে চলতে থাকবে, এমনটাও নয়। গণভোটে ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ আর থাকার পক্ষে ভোট পড়েছে ৪৮ শতাংশ। এ রায়ের পর অক্টোবর নাগাদ পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেন ডেভিড ক্যামেরন। দল থেকে অন্য কোনো নেতাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন প্রধানমন্ত্রীই ব্রেক্সিট ইস্যুতে ইইউর সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট মার্টিন শুলজ বলেন, লিসবন চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫০ অনুযায়ী ব্রেক্সিটের প্রক্রিয়া দ্রুত করা যায় কিনা তা নিয়ে ইইউ-এর আইনজীবীরা খতিয়ে দেখছেন। লিসবন চুক্তির ওই অনুচ্ছেদে ইইউ থেকে সদস্য দেশের আলাদা হওয়ার প্রক্রিয়া উল্লেখ করা থাকলেও তা এখনো পরীক্ষিত হয়নি। তিনি আরো বলেন, ব্যাপারটি কেবল যুক্তরাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে কিনা সে ব্যাপারে আমার সন্দেহ রয়েছে। তারা যে অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করার জন্য একতরফা ঘোষণা দিয়েছে সেটি আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে। কিন্তু তা শেষ কথা হতে পারে না। এপি, বিবিসি, ইন্ডিপেনডেন্ট ও দ্য গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন