ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক আরো গভীর করতে চান। সিরিয়া ইস্যুতে দেশ দুইটির মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব নিরসনের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিদ্রোহীদের ওপর রাশিয়ার বোমা হামলা বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাবিত চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী রুশ বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়ে আল-কায়েদার সিরীয় শাখা আল-নুসরা ফ্রন্টের বিরুদ্ধে হামলা চালাবে। কিন্তু এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়াকেও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিদ্রোহীদের ওপর বোমা হামলা বন্ধের চেষ্টা করতে হবে।
অপর খবরে বলা হয়, সিরিয়ার আলেপ্পোতে সরকারি বাহিনীর হামলায় শতাধিক বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৯ মাসে রুশ বিমান হামলায় অন্তত ৭ হাজার ৩১ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ, অর্থাৎ ২ হাজার ৪৯৮ জনই সাধারণ নাগরিক, যার মধ্যে অন্তত ৫৮৭ জন শিশু এবং ৩৬০ জন নারী ছিল। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির অন্যান্য মিত্রের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পদক্ষেপ নেয়া হলেও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে তা নস্যাৎ হয়ে যায়। সিরিয়া ইস্যুতে শুরু থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক কূটনৈতিক দূরত্ব সৃষ্টি হয়। গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সিরীয় সেনাদের বেশ কয়েকবারই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন রুশ সেনা উপদেষ্টারা। সিরিয়ার আলেপ্পোতে সরকারি বাহিনীর অভিযানে নিহতরা জাইশ আল-ফাত এবং আল-কায়েদার সিরীয় শাখা আল-নুসরা ফ্রন্টের সদস্য ছিল। এদিকে গত বৃহস্পতিবার উত্তরাঞ্চলীয় শহর আলেপ্পোর আল-মালেহ এলাকায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীগোষ্ঠী জাইশ আল-ফাতের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে সিরীয় এবং রুশ বাহিনী বিমান হামলা চালালে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ফলে বিদ্রোহীদের বিপুল সংখ্যক সদস্য সরকারি বাহিনীর হাতে নিহত হয়। একই সময়ে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে আল-নুসরা ফ্রন্টের সদস্যরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রসঙ্গত, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সামরিক বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ আলেপ্পো শহর দখলের জন্য লড়াই করছে। গত কয়েকদিনের লড়াইয়ে সরকারি বাহিনী বেশ কয়েকটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিলেও শহরটির অনেক অঞ্চল এখনো বিভিন্ন বিদ্রোহীগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উল্লেখ্য, সিরিয়ায় ২০১১ সালের মার্চে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। পরে তা গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা সংঘাতে এ পর্যন্ত চার লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। উদ্বাস্তু হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ অন্য দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সুযোগে দেশটিতে শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছে আইএস এবং আল-কায়েদার সিরীয় সংগঠন আল-নুসরা ফ্রন্ট। চলমান এই গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট আসাদের প্রতি সরাসরি সমর্থন ব্যক্ত করেছে রাশিয়া। আল-জাজিরা, প্রেসটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন