শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিক্ষোভে উত্তাল কাশ্মিরজুড়ে কারফিউ সংঘর্ষে নিহত ১৬, ২ শতাধিক আহত

সকল বাধা উপেক্ষা করে বুরহানের জানাজায় লাখো মানুষের ঢল

প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : কথিত বন্দুকযুদ্ধে হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জম্মু-কাশ্মিরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় ২ শতাধিক আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। আহতদের মধ্যে ৯৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এদিকে শ্রীনগরসহ দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কয়েকটি এলাকায় জারিকৃত কারফিউকে বিস্তৃত করা হয়েছে। এবার পুরো কাশ্মির উপত্যকা জুড়েই কারফিউ জারি করা হয়েছে। সহিংস পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো অমরনাথ যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে প্রাণ হারানো হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান মুজাফফর ওয়ানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত শনিবার থেকে নতুন করে উত্তাল হয়ে ওঠে কাশ্মির। এদিন কারফিউ আর বাধা উপেক্ষা করে বুরহান ওয়ানির লাশ নিয়ে রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ। নিহত মুজাহিদিন কমান্ডারের জানাযায় মানুষের ঢল দেখা যায়। খবরে বলা হয়, দক্ষিণ কাশ্মিরের পুলওয়ামা জেলার ট্রাল শহরের ঈদগাহে এই জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ধরনের বাধা উপেক্ষা করে সেখানে জড়ো হয় মানুষ। সেখানে কাশ্মিরবাসীর আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ উঠে আসে। উল্লেখ্য, অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় তার বাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে বুরহান নিহত হন বলে দাবি করেছে ভারতীয় পুলিশ। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলৌমা ও শ্রীনগরের আংশিক অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এদিকে অশান্ত পরিস্থিতিতে অমরনাথ যাত্রা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবরে এসব কথা বলা হয়েছে। হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান মুজফফর ওয়ানি ছিলেন ২২ বছর বয়সী তরুণ। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, তরুণদের ভারতবিরোধী সন্ত্রাসে শামিল হওয়ার ডাক দিয়ে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে সম্প্রচারিত একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে তাকে। বলা হচ্ছে,  সে নিজে সরাসরি সন্ত্রাসে শামিল হয়নি বা একটিও গুলিও হয়ত ছোঁড়েনি। কিন্তু কাশ্মীরে সহিংস কার্যকলাপ সংঘটিত করার পিছনে ছিল বুরহান।
এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের বিভিন্ন থানা, বিজেপি অফিস এবং নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা চালায় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। একটি পুলিশ স্টেশনে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর থেকে তিন পুলিশ সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন। কাশ্মির জুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। জম্মুতে সাময়িক সময়ের জন্য অমরনাথ যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে। স্কুল বোর্ড পরীক্ষাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার কথা বলে ঘটনাস্থলে আধা সামরিক বাহিনীর ১২শ’ সদস্যকে পাঠানোর পরিকল্পনা করে সরকার। গত শুক্রবার সেনা ও পুলিশ যৌথ অভিযানে বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হন। হিজবুল কমান্ডার নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রীনগর এবং দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কিছু এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় তার বাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে বুরহান নিহত হন বলে দাবি করে ভারতীয় পুলিশ। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলৌমা ও শ্রীনগরের আংশিক অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। কারফিউ আর বাধা উপেক্ষা করে ভারতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে প্রাণ হারানো হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান মুজফফর ওয়ানির জানাযায় মানুষের ঢল নামে। বুরহানকে মরিয়া হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। তার অবস্থান জানাতে পারলে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কারও  ঘোষণা করা হয়েছিল। শনিবার গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া আগাম খবরের ভিত্তিতে তাকে খুঁজে বের করে নিরাপত্তাবাহিনী। সকালে বুমদুরা গ্রামে তাকে ঘিরে ফেলে পুলিশ ও সেনার যৌথ দল। সংঘর্ষে আরও ২ জঙ্গির সঙ্গে সে প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন