স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীদের দেশে আসার বিষয়ে অনুৎসাহিত করেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশ থেকে প্রবাসীরা এসেই দেশে করোনা ছড়িয়েছেন। তাই আহ্বান জানাবো, করোনা ভাইরাস যে সব দেশে ছড়িয়েছে সেখান থেকে যেন প্রবাসীরা দেশে না আসেন। পাশাপাশি বিদেশ থেকে প্রবাসীদের আসা বন্ধে পর্যাপ্ত প্রচারণা ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছি। এছাড়া বিদেশ থেকে যারা আসবে তাদের সবাইকে প্রয়োজন হলে কোয়ারেন্টাইন করা হবে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভা শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সোমবার (৯ মার্চ) এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সব মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএমএর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও ডব্লিউএইচওর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এসময় দেশের বাইরে থেকে যেকোনও লোক আসলে তার খবর নিতে ও পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনা প্রতিরোধে কোরিয়া, ইরান, ইতালি ও চীনের নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশ থেকে যারা আসবে তাদের সবাইকে প্রয়োজন হলে কোয়ারেন্টাইন করা হবে। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পোস্টার, ব্যানার, লিফলেটসহ প্রচারপত্র বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় ক্যাবল টিভির মাধ্যমে, সচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা চালানোর জন্য ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সচেতন ও সতর্কভাবে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে। খেলাধুলাসহ ধর্মীয় যেকোনও অনুষ্ঠান সীমিত পরিসরে করতে বলা হয়েছে। মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানও সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ক্রিকেট ম্যাচে যাতে দর্শক না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ধর্মমন্ত্রণালয়কে তাদের আওতাধীন তিন লাখেরও বেশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া করমর্দনসহ সামাজিক আচার এড়িয়ে যেতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনই বন্ধ করার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিকভাবে সব প্রতিষ্ঠানই চলবে। তবে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত হ্যান্ডওয়াশ ও সাবান রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, স্কুল-কলেজে একই মানুষ প্রতিদিন আসেন। তবে সামাজিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সমাগম হয়। তাই এগুলো এড়িয়ে যেতে বলা হচ্ছে।
করোনার চিকিৎসায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, জানুয়ারি থেকে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমাদের আশঙ্কা ছিল ভাইরাস আমাদের আক্রমণ করতে পারে। গত রোববার তিন জন শনাক্ত হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় জেলা পর্যায়ে ১০০ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঢাকায় ৪০০ বেডের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া করোনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত কিট, মেশিন ও ওষুধ রয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত মজুত আছে। আরও ওষুধ ও কিট সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। ডব্লিউএইচও আমাদের ১০০ মিলিয়নের ফান্ড দিয়েছে। তবে আরও ফান্ডের দরকার। সমাজের বিত্তবান এবং বিভিন্ন কোম্পানিকেও সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। তারা এই মুহুর্তে মাস্ক ও গাউন দিলে উপকার হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন