শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মিয়ানমারে চীনা ক্ষেপণাস্ত্র উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫০ পিএম

শিগগিরই চীনের তৈরি স্বল্পপাল্লার এসওয়াই-৪০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের প্রথম চালান গ্রহণের সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিবেশি রাষ্ট্র মিয়ানমার। বেশ কয়েক বছর ব্যাপক আলোচনার পর এই ক্ষেপনাস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। কর্মকর্তা বলছেন, এসওয়াই-৪০০ পরিচালনার জন্য মিয়ানমারে কিছু প্রযুক্তিও স্থানান্তর করা হবে এবং এগুলো কেনার জন্য ঋণও দেয়া হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে সাউথ এশিয়ান মনিটর।
২০১৮ সালের নভেম্বরে এয়ারশো চায়নায় এসব স্বল্পপাল্লার এসওয়াই-৪০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আরেক নাম ডিএফ-১২এ। এর স্টান্ডার্ড কনফিগারেশনে আটটি কনটেইনারে সলিড-ফুয়েল মিসাইল থাকে। কারখানাতেই এসব কনটেইনারে মিসাইল স্থাপন করে দেয়া হয় এবং কোনরকম রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া বহু বছর এগুলো সংরক্ষণ করা যেতে পারে। উলম্বভাবে ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন করা হয় এবং এর পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার। এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপনাস্ত্রে বিভিন্ন ধরনের ওয়্যারহেড ব্যবহার করা যেতে পারে। এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপনাস্ত্র জিপিএস/আইএনএস গাইডেন্স সিস্টেম সজ্জিত। চারটি কন্ট্রোল সারফেস ও স্যাবিলাইজিং পাখার সাহায্যে এটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যপানে উড়ে চলে। এর পাল্লা কমানো বাড়ানো যায়। বিভিন্ন টার্গেটে একাধিক ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করা সম্ভব।
মিসাইল ল্যান্সার ইউনিটগুলো ১৬ চাকার অত্যন্ত সচল ওয়ানশান মিলিটারি ট্রাক চেসিসের উপর বসানো। ট্রাকগুলো চলে ৫১৭ হর্স পাওয়ারের দিউজ ডিজেল ইঞ্জিনে। সড়ক পথে এর সর্বোচ্চ গতি ৭৫ কি.মি./ঘন্টা এবং সর্বোচ্চ ক্রুজিং রেঞ্জ ৬৫০ কি.মি.।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কাতারের সশস্ত্র বাহিনীও চীনের কাছ থেকে এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপনাস্ত্র সংগ্রহের কথা ঘোষণা করে। একই বছর কাতার ন্যাশনাল ডে প্যারেডে এই ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা প্রদদর্শিত হয়। মিয়ানমার এই ক্ষেপনাস্ত্র সংগ্রহ করায় দেশটির সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে অনেক দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়ন চলছে। ইয়াঙ্গুনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র বাংলাদেশী ক‚টনীতিক বলেন, মিয়ানমার নিশ্চিতভাবে একগুলো তার দেশের বিদ্রোহী বা ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে না। এগুলো শুধু আমাদের কথা মাথায় রেখে সংগ্রহ করা হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোর কারণে জাতিসংঘ তদন্তকারীরা গত বছর মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে যেসব কোম্পানি আর্থিক সহায়তা দেয় সেগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহবান জানায়। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী মিশনের এক রিপোর্টে দেখানো হয় কিভাবে রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংস দমন অভিযান চালানোর জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনী তার ব্যবসা, বিদেশী কোম্পানি ও অস্ত্র চুক্তিগুলোকে ব্যবহার করেছে। ওই খেদাও অভিযানে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রিত দুটি প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১২০টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় ৬০টি বিদেশী কোম্পানির লেনদেন রয়েছে। মিশন প্রধান মারজুকি দারুসম্যান বলেন, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে সেনাবাহিনীকে দূরে সরাতে পারলে অর্থনীতি যেমন উদার হবে তেমনি মিয়ামারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও দ্রুততর হবে। মিশনের রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৭ সালে ‘জাতিগত নিধন’ অভিযান শুরু হওয়ার পরের সপ্তাহগুলোতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে ৪৫টির মতো কোম্পানি ও সংস্থা ১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি চাঁদা দেয়। এতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, শীর্ষস্থানীয় দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কেবিজেড গ্রুপস ও ম্যাক্স মিয়ানমার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বেড়া নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
জাতিসংঘ দল মিয়ানমারে অস্ত্র বিক্রির উপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও আহবান জানায়। এতে উল্লেখ করা হয় যে, দেশটির সংখ্যালঘু গ্রুপগুলো যখন মানবিক সঙ্কটে নিপতিত তখনও সাতটি দেশের বেশ কিছু কোম্পানি মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখে। রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে চীন, উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইসরাইল, ফিলিপাইন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের ১৪টি কোম্পানি মিয়ানমারকে জঙ্গিবিমান, আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, যুদ্ধজাহাজ, ক্ষেপনাস্ত্র ও ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপক সরবরাহ করছে। জাতিসংঘ উল্লেখ করে, এই অস্ত্র বিক্রি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যার রাইটস (আইসিসিপিআর)-এর পরিপন্থী। এর রাষ্ট্রীয় পক্ষ হলো উত্তর কোরিয়া, ইসরাইল, রাশিয়া ও ইউক্রেন এবং চীন হলো স্বাক্ষরকারী। উল্লেখিত দেশগুলো কার্যকরভাবে মানবাধিকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Md Sohel Azgar ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১:০০ এএম says : 2
ভাল হয়েছে কোনো মুসলিম বন্ধু ত আমাদের নাই সব ত মুসরিক বন্ধু যা আল্লাহ বার বার বলেছেন তুমরা মুসরেকের সাথে বন্ধুত্ব করোনা কারন লাভের চাইতে ক্ষতি করবে বেশি
Total Reply(0)
Foysal Hasan ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১:০০ এএম says : 2
সরকার এত দিন কি করছে। খবর রাখেনাই।আমাদের নিজেদের প্রযুক্তিতে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে হবে
Total Reply(0)
Mizan ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
চেতনা দিয়ে ঐসব ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিহত করমু।
Total Reply(0)
Ali Akbar ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
সরকার চাউল লুট নিয়ে এগুলা দেখবার সময় এখন নেই।
Total Reply(0)
Mohammed Kuti Miah ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
কেন ভারত তো আছে আমাদের পাশে ভয় কিশের
Total Reply(0)
Nazmul Huda ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
চিন্তার কোন কারন নেই আমাদের দেশের সরকারের কাছে ভারতের দেওয়া অস্ত্র গোবর আর গোমুত্র আছে
Total Reply(0)
Ashikur Rahman ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
করোনার চেয়েও আমরা শক্তিশালী,,,আমাদের মিয়ানমার কি করতে পারবে,,,ধাক্কা দিয়া রানা প্লাজা ফালাইয়া দেওয়ার অভিজ্ঞতা কি তারা ভুলে গেছে
Total Reply(0)
Mehedi hasan ১২ এপ্রিল, ২০২০, ৬:১৪ এএম says : 0
এটা ভুয়া খবর,,,কোন দেশ ই ৩০০কিমি এর বেশি পাল্লার মিসাইল অন্য কোন দেশ কে দিতে পারবে না,,,,,শুধু,,পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া,ইরান ছাড়া অন্য সকল দেশ ই এই চুক্তিতে সই করেছেন
Total Reply(0)
মাহবুব ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১০:২৭ এএম says : 0
আওয়ামীলীগ এই সকল ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী তাই বন্ধুগণ ভয়ের কিছু নেই
Total Reply(0)
মাসুদ আলম ১২ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৪৬ পিএম says : 0
বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে নাকি ঘুমাচ্ছে?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন