মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ব্যর্থ অভ্যুত্থানে আরো সুসংহত হয়েছে এরদোগানের নেতৃত্ব

প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

একনায়কের অভিযোগ কাটিয়ে হারানো জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধার
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের নেতৃত্বকে আরও সুসংহত ও শক্তিশালী করবে। এরদোগান ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেন। সাবেক এই ফুটবল খেলোয়াড় ও ইস্তাম্বুলের এই প্রাক্তন মেয়র পুরাতন ধর্মনিরপেক্ষতার বেড়া ভেঙ্গে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শাসনকালে তার বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগও ওঠে। তবুও তুরস্কের মানুষ যেভাবে রাস্তায় নেমে তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা রুখে দিয়েছে তাতে তার জনপ্রিয়তা যেমন প্রমাণ হয়েছে, তেমনি তার নেতৃত্বও আরো সুসংহত হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। অতীতে এরদোগানকে অনেক ধকল সহ্য করতে হয়েছে। ১৯৯৯ সালে একটি ইসলামী কবিতা আবৃতির জন্য তাকে চার মাস জেল খাটতে হয়েছে। তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ^াসী আদালত তার ইসলামপ্রীতির কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দ-াদেশ দিয়েছিল। ওই ঘটনাই তাকে জনগণের নেতায় পরিণত করে।
এরদোগান ২০০৩ সালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। তখন তিনি তুরস্ককে ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের মডেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টা চালান। এ সময় এরদোগানের বিরুদ্ধে তুরস্কের জনগণের ওপর ইসলাম চাপিয়ে দেয়ার ও তার বিরোধী পক্ষ ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ^াসীদের ওপর দমন-পীড়নের জন্য তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়।
অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা চলাকালে এরদোগান তার আইফোন দিয়ে ফেইস টাইম অ্যাপের মাধ্যমে একটি আবেগপ্রবণ বার্তা ছড়িয়ে দেন, যা মুহূর্তেই ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরে। তার এ কর্মকা-কে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও ভেনেজুয়েলার নেতা হুগো শ্যাভেজের সঙ্গে তুলনা করা হয়। শ্যাভেজ ২০১৩ সালে মারা যান। ২০০২ সালের অভ্যুত্থান শ্যাভেজকে সাময়িকভাবে অপসারণ করলেও ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তিনি আরও শক্তিশালী হন। এরদোগান অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে রয়েছেন। তবে তিনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, এর সঙ্গে জড়িতদের চরম মূল্য দিতে হবে। নিউইয়র্কের সেন্ট লরেন্স বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যপ্রচ্যের ইতিহাস বিষয়ক অধ্যাপক হাওয়ার্ড এইসেনস্ট্যাট বলেন, তিণি ভীষণভাবে শক্তি সঞ্চয় করে ফিরে এসেছেন। অল্প সময়ের জন্য হলেও এরদোগানের বিরুদ্ধে যে কোন হুমকি মোকাবেলায় এখন তুর্কি সমাজের সব শক্তি একাট্টা হয়েছে এবং এটা এরদোগানের জন্য সুখবর। এ যাবত এরদোগানের শাসন সময়ে তুরস্কের অর্থনীতি গতি পেয়েছে। ওই অঞ্চলে কূটনৈতিক তৎপরতাও পালে বাতাস পেয়েছে। তবে ওই অঞ্চলের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় তার এসব অগ্রগতি চাপা পড়ে গেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে কয়েক লাখ শরণার্থী তুরস্কে পৌঁছেছে। তাদের সামলানো একটা বিশাল ব্যাপার। এ ছাড়া অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে কুর্দি বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায়ও।
এরদোগান ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী থেকে প্রেসিডেন্ট হন। এরপর সংবিধান সংশোধন করে তিনি নিজের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা নেন। তার সমর্থকরা এখনই ২০২৩ সালে তুরস্কের জাতীয় দিবস পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে ধারণা করা হয়, এরদোগান অন্তত ওই সময় পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। এপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন