গুলেনের আন্দোলন আরেকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আন্দোলন
জরুরি অবস্থার মেয়াদ ৪৫ দিন
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের হোতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা হলেও তা ৪৫ দিনের বেশি স্থায়ী হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি। বেসরকারি টেলিভিশন এনটিবি উপ-প্রধানমন্ত্রী নুমান কুরতুলমুসের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আমরা যতদ্রুত সম্ভব জরুরি অবস্থার অবসান ঘটাতে চাই। তিনি বলেন, অবস্থা স্বাভাবিকে ফিরলে আমরা মনে করি, এতে বড়জোর এক কী দেড় মাস লাগবে। আশা করি এরপর এর মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। এর আগে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে টেলিভিশনে এ ঘোষণা দেন তিনি। ভাষণে এরদোগান বলেন, তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্যে হুমকি মোকাবিলার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি এ সময় তিনি জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষণাও দেন। কিন্তু তিন মাসের জরুরি অবস্থা প্রেসিডেন্টকে সংসদকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার এবং সাধারণ মানুষের অধিকার খর্ব করার ক্ষমতা দিচ্ছে। ওয়েবসাইট।
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান তার দেশে আবারো সামরিক অভ্যুত্থান হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে এবার তা সহজ হবে না এই কারণে যে সবাই এখন অভ্যুত্থানের ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। তুরস্কে জরুরি অবস্থা জারির পর প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে টেলিভিশনে তার এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়। আঙ্কারার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই সাক্ষাৎকার নেয়। তিনি বলেন, ১৫ জুলাই অভ্যুত্থানচেষ্টার প্রেক্ষাপটে সামরিক বাহিনীতে খুব দ্রুত নতুন সদস্য নিয়োগ করা হবে। তিনি আরো বলেন, নতুন অভ্যুত্থানচেষ্টা হওয়া সম্ভব, তবে তা সহজ হবে না। কারণ আমরা আরো বেশি সতর্ক। তিনি বলেন, এটা খুবই স্পষ্ট যে, আমাদের গোয়েন্দাবাহিনীর মধ্যে মারাত্মক ঘাটতি এবং ব্যবধান ছিল। এটা কোনোভাবেই গোপন বা অস্বীকার করা যায় না। আমি বিষয়টি গোয়েন্দাপ্রধানকে জানিয়েছি। এরদোগান আরো বলেন, তিনি ওই রাতে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হাকান ফিদানকে ফোন দিয়েছিলেন। কিন্তু তা তার কাছে পৌঁছেনি।
অপর খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, আমেরিকায় স্বেচ্ছা নির্বাসিত তুর্কিবিরোধী নেতা ফতেহউল্লাহ গুলেনের সঙ্গে সম্পর্কিত আন্দোলনকে আরেকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তৎপরতা হিসেবে দেখা হবে। গত শুক্রবার এরদোগান সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ ঘোষণা দেয়া হলো। একটি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ ঘোষণা দেন এরদোগান। তিনি বলেন, তারা যেই হোক না কেনো তাদের বিরুদ্ধে তুর্কি সরকার লড়াই অব্যাহত রাখবে। এসব ব্যক্তি তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোতে অনুপ্রবেশ করেছে এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা বিদ্রোহ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গুলেনের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনকে তুরস্কের নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-এর সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। গুলেনের আন্দোলনকে ক্যান্সার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলে, নির্মূল করা না হলে তা প্রাণঘাতী রূপ নেবে। সর্বোচ্চ হারে সফলতার জন্য যা কিছু করা দরকার হবে তুর্কি সরকার তাই করবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আইনে যা কিছু করার অনুমোদন দেয়া হয় বা সমর্থন করে তার সবই করা হবে। গুলেনপন্থিদের বিদ্রোহে জড়িয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে, তা কখনোই কল্পনা করা যায়নি বলে জানান তিনি। গুলেনপন্থিদের তিনি বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করেন। তিনি দাবি করেন, সব সময়ই তারা দু’মুখো চরিত্রের ছিল এবং এবারে তাদের সত্যিকার স্বরূপ বের হয়ে এসেছে। অবশ্য গুলেন তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার কথা পরিষ্কার ভাষায় অস্বীকার করেছেন। অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকে তুর্কি সরকারের সাজানো নাটক হিসেবে দাবি করে গুলান বলেছেন, বিরোধীদের নির্মূল করার লক্ষ্যে হয়ত এটি করা হয়েছে। এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গুলেনের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ থাকলে তা প্রকাশ বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন। রয়টার্স, ডেইলি সাবাহ, ওয়েবসাইট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন