শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দিল্লীতে ধেয়ে যাচ্ছে পঙ্গপাল

হরিয়ানা অতিক্রম করছে, পথে যা পাচ্ছে খেয়ে সাবাড়

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০২০, ৮:২৮ পিএম

এমনিতেই রাজধানী নয়াদিল্লীসহ ভারতের অনেকগুলো রাজ্যে করোনাকারণে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বৃদ্ধির গতি। তা নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ বেড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের। আর এহেন নাজুক অবস্থায় দিল্লীর দিকে ধেয়ে যাচ্ছে সর্বনাশা পঙ্গপাল। দিল্লী অভিমুখে ধাবমান এই পঙ্গপাল পথে পথে যা পাচ্ছে খেয়ে সাবাড় করছে।
দিল্লীমুখী ধাবমান পঙ্গপালের অগ্রবর্তী দল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হরিয়ানা অতিক্রম করছিল। এই দলটির পেছনে আরো কয়েকটি বাহিনী আসছে। যারা হরিয়ানা পার হয়ে দিল্লীতে হামলে হানা দিতে পারে। যে কোনো সময়েই দিল্লীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষত ফল-ফসল আবাদ, উৎপাদনের প্রধান এলাকাগুলোতে হামলে পড়তে পারে পঙ্গপাল। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ সূত্রের।
এবারের পঙ্গপালগুলো পরিপক্ক। গোলাপী রঙের। আগেরগুলোর চেয়ে প্রায় তিন গুণ বড়। এমনকি খাদ্যশস্য সাবাড়েও আরো বেশিই আগ্রাসী প্রকৃতির দেখা গেছে। খাদ্যশস্য, ফল-ফসল, সবুজের চিহ্ন এমনকি তুলা পর্যন্ত যা সামনে পাচ্ছে সাবাড় করে নিচ্ছে। স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগ এ নিয়ে উদ্বেগের কথা জানায়।
চলতি মে মাসের শুরুতে পাকিস্তান থেকে সীমান্তপথ অতিক্রম করে ভারতের রাজস্থানে হামলে পড়েছিল পঙ্গপাল। অর্ধেক ফসল নষ্ট করেছে। তবুও রাজস্থানে পেট ভরেনি ওদের। এরপর পঙ্গপাল ধেয়ে যাচ্ছে দিল্লীর দিকে নিশানা করে।
এদিকে যোধপুরভিত্তিক পঙ্গপাল সতর্ককারী সংস্থার (এলডব্লিউও) উপ-পরিচালক কেএল গুরজার বলেন, ২০১৯ সালে পরিপক্ক হলুদ রঙয়ের পঙ্গপাল পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে বংশ বিস্তার করেছিল। তাদেরই বংশ থেকে এসেছে গোলাপি রঙয়ের একদল পঙ্গপাল। এই পঙ্গপাল আগেরগুলোর চেয়ে আরো বেশি খাদ্যশস্য, ক্ষেত-খামারের ফল-ফসল, সবুজতা ইত্যাদি সাবাড় করার ক্ষমতা রাখে। মানে ক্ষুধাপূরণে আগ্রাসী ধরনের।
কৃষকদের নিয়ে কাজ করেন সমাজকর্মী রামানদিপ সিং মান। তিনি বললেন, আমি মনেই করতে পারছি না দিল্লী সর্বশেষ কখন পঙ্গপালের আক্রমণের শিকার হয়েছিল। তবে এবার যে পঙ্গপাল বাহিনী ঢুকেছে তারা ২০১৯ সালের দলটির চেয়ে তিনগুণ বড়।
তিনি বলেন, এই পঙ্গপাল রাজস্থানে যা পেয়েছে তাতে পেট ভরেনি। এখন রাজস্থান ও হরিয়ানা সীমান্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে। পঙ্গপালের অগ্রবর্তী এই দলটির পেছনে আরো কয়েকটি বাহিনী আসছে। যারা হরিয়ানা পার হয়ে দিল্লীতে হামলে পড়তে পারে।
গতবছর ২০১৯ সালে রাজস্থানের ১২ জেলায় পঙ্গপাল হানা দিয়ে ৬ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে। তখন এক হাজার কোটি রুপির আর্থিক ক্ষতি হয়। এবার পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্যের কৃষিবিভাগ ৪৫টি পিকআপ, ৭০ টি যান দিয়ে পরিস্থিতি মনিটরিং করছে। ৬শ’ ট্রাক্টর দিয়ে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে কীটনাশক ছিটাচ্ছে। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ড্রোন চেয়েছে পঙ্গপাল দমনের জন্য।
রাজস্থানের অনেক এলাকা সাবাড় করে পঙ্গপাল এখন ছুটে চলেছে হরিয়ানার দিকে।
এদিকে জায়সালমার থেকে আসা আরেকটি পঙ্গপাল বাহিনী ঢুকেছে মধ্যপ্রদেশের উজায়ান এলাকায়। গুজরাটের বানাসকাথা এলাকাও আক্রান্ত হয়েছে পঙ্গপালের হানায়।
রাজস্থানের কৃষক নেতা রামপাল জাট বলেন, নতুন আবাদ করা তুলা ও চীনাবাদাম ক্ষেত ছারখার করে ফেলছে পঙ্গপাল। এগুলো এ মৌসুমের অর্থকরী ফসল। যদি এদের রাজস্থানে নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে এরা এক সপ্তাহের মধ্যে দিল্লী পৌঁছে যাবে। এমনটি আগাম শঙ্কা ব্যক্ত করেছিলেন রাজস্থানের কৃষক রামপাল জাট। তাই কী এখন ফলতে চলেছে পঙ্গপালের দিল্লীমুখী ধাওয়ার মতিগতিতে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন