শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কোনো অবস্থাতেই মানচিত্র বদলাবো না : নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২০, ২:১২ পিএম

কোনো অবস্থাতেই মানচিত্রে বদল ঘটানো হবে না বলে এবার ভারতকে সাফ জানিয়ে দিল নেপাল। নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গয়ালি সংবাদমাধ্যমে এমনটাই জানিয়েছেন বলে গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রদীপ গয়ালি বলেন, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে গত ২ নবেম্বর নিজেদের মানচিত্র বদল ঘটায় ভারত। তার পরই আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিই। এটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত। কারণ ওই এলাকাগুলো নেপালের মধ্যেই পড়ে। এ নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। তবে কোন এলাকা নেপালের মধ্যে পড়ছে, তা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।
লিপুলেখ গিরিপথ, লিম্পিয়াধুরা এবং কালাপানিকে নিজেদের দেশের অংশ হিসেবে দেখিয়ে সম্প্রতি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি লিপুলেখ গিরিপথ থেকে কৈলাস-মানস সরোবরে যাওয়ার পথ পর্যন্ত একটি রাস্তার উদ্বোধন করেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তাতে প্রতিবাদ জানায় নেপালের কেপি শর্মা ওলির সরকার। তারপরই ওই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করে তারা। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় ভারত। এমনকি এর পেছনে চীনের উস্কানি থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় ভারত।
তাতে দুদেশের মধ্যে উত্তাপ আরও বাড়ে। এর পর কিছুটা সুর নরম করে পররাষ্ট্র সচিব স্তরে আলোচনার প্রস্তাব দেয় নেপাল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত দিল্লির তরফে কোনো সাড়াশব্দ মেলেনি। এ বিষয়টি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালি। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র সচিব স্তরে আলোচনা চালাতে ভারতকে চিঠি দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার জবাব পাইনি। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালাতে দুদেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
করোনা সংকটের মধ্যেই গত এক মাস ধরে লাদাখ সীমান্তে চীনের সেনাবাহিনী ও ভারতীয় সেনার মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন করতে দুই দেশের সেনাবাহিনী স্তরে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গয়ালি প্রশ্ন তুলে বলেন, ভারত যদি চীনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে তবে নেপালের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সমস্যা কোথায়।
লিপুলেখ গিরিপথ ও কৈলাস-মানস সরোবরের মধ্যে রাস্তা তৈরি নিয়ে নেপালের আপত্তির পিছনে চীনের উস্কানি রয়েছে কি না প্রশ্নটি সরাসরি খারিজ করে দেন গয়ালি। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেপালই একমাত্র দেশ, যা কখনো বিদেশি ঔপনিবেশিকদের হাতে ওঠেনি। ভারত এবং চীন দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। কারো মুখের ওপরই দরজা বন্ধ করে দিতে পারে না নেপাল।
ভারত ও নেপালের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে কোনো তুলনাই চলে না। কারণ ব্যবসা বাণিজ্য হোক বা সীমান্ত সংযোগ, নানাভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত ভারত ও চীন। এদিকে নেপালের সঙ্গে চলমান সমস্যা নিয়ে দিল্লির পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, এ নিয়ে আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারত। নেপালের ঐতিহ্যপূর্ণ সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বকে গভীরভাবে সম্মান করি আমরা। দুদেশের বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গত কয়েক বছরে আরও প্রসারিত ও বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে। নেপালের মানবিক, উন্নয়নমূলক ও যোগাযোগ স্থাপন প্রকল্পে ভারতের সহায়তা আরও বেড়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন