ইনকিলাব ডেস্ক : চীনের সেনাবাহিনী ও ভারতের সৈন্যদের মধ্যে গত সপ্তাহে এক ঘণ্টা লড়াই হয়েছে। চীনা সেনাসদস্যরা ভারতের উত্তরখ-ে হঠাৎ করেই ঢুকে পড়েছিল এবং ভারতের সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। উত্তরখ-ের পার্বত্য জেলা চামোলিতে এই আক্রমণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হারিশ। লোকসভায় বিরোধী দলের দাবির মুখে এ ব্যাপারে কথা বলেন দেশটির কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর। তিনি বলেন উত্তরখ-ে চীনা সেনাদের অনুপ্রবেশ অবশ্যই অনভিপ্রেত। যদিও ভারত-চীন সীমান্তের ওই এলাকাটির সঠিকভাবে চিহ্নিত করা নেই। সে কারণে ওই এলাকায় বছরে এ ধরনের চার পাঁচশ’ ঘটনা ঘটে। কিন্তু সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে এটিকে আমরা মোটেই স্বাভাবিক মনে করছি না। এব্যাপারে যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, চীনের সঙ্গে ভারতের উত্তরখ- রাজ্যের ৩৫০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী হারিশ রাওয়াত বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন মুখোমুখি লড়াইয়ের প্রায় এক ঘণ্টা পর দুই পক্ষ স্ব-স্ব অবস্থানে ফিরে যায়। হামলাটি ভারত ও চীন সীমান্তের ৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী হয়েছে বলে সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি। উত্তরখ-ের মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত বলেন, তবে আমি নিশ্চিত কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। রাওয়াত আরো বলেন, এটা দুশ্চিন্তার কারণ। আমাদের সীমান্ত শান্তিপূর্ণ ছিল। আমরা সতর্ক প্রহরা বাড়ানোর আবেদন করেছি। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, গত ১৯ জুলাইয়ে এই সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দেয়া হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজ্জু বলেছেন, আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন চাইবো। আগেও চীনের সেনাবাহিনী চামোলিতে অনুপ্রবেশ করার অভিযোগ রয়েছে এবং সেখানের পাথরে ‘চীন’ লিখে গেছে। এই এলাকায় ২০১৩ ও ২০১৪ সালে চীনের সেনাবাহিনী আকাশপথে ও পদাতিক সৈন্যরা অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিল। চলতি বছরের জুন মাসে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ২৫০ সেনা অরুণাচলের কামেং জেলায় ঢুকে পড়েছিল। এই অনুপ্রবেশের ঘটনা এমন সময়ে ঘটেছিল যখন ভারতের নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার গ্রুপে প্রবেশের বিরোধিতা করছিল চীন। অন্যদিকে, তিন চীনা সাংবাদিককে এ মাসের মধ্যেই ভারত ছাড়ার নির্দেশ প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর জানান, তাদের এদেশে থাকার কোন বৈধতা নেই। সুতরাং এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। অন্য একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সিনহুয়া কর্তৃপক্ষ এ তিন সাংবাদিকের জায়গায় অন্য কাউকে পাঠাতে পারবে। গত মাসে পারমাণবিক উপাদান সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে ভারতকে সদস্যপদ দিতে চীনের অস্বীকৃতির পর যখন দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চলছে তখনই তিন চীনা সাংবাদিককে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই তিন সাংবাদিকই চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিনিধি হিসেবে ভারতে কাজ করছিলেন। ওই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, তিন সাংবাদিকই বেশ কয়েকবার তাদের ভিসার মেয়াদ পাল্টেছেন। তাদের একজন সাত বছর ধরে ভারতে বসবাস করছেন। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ওই তিন চীনা সাংবাদিক ব্যাঙ্গালুরু যান এবং তিব্বতের নির্বাসিত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। আর তাতেই ভারত সরকার তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়। সূত্র : এপি, এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন