তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর আটক ৭৫৮ সেনা মুক্ত
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের সামরিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। একই সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাপ্রধানকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার এরদোগান বিবিসিকে বলেন, তার এ প্রস্তাবগুলো পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে। গত ১৫ জুলাই সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী পক্ষকে দমনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অভ্যুত্থান চেষ্টায় অন্তত ২৪৬ জন নিহত হন। তুরস্ক বলছে, অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিম প-িত ফেতুল্লাহ গুলেনের হাত রয়েছে। তবে গুলেন তা অস্বীকার করেছেন। প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, আমরা একটি নতুন সাংবিধানিক প্যাকেজ নিয়ে আসতে যাচ্ছি। এটা পার্লামেন্টে অনুমোদন হলে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এমআইটি) ও সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে আসবে, সামরিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা একটি জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করব। অভ্যুত্থান চেষ্টার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬৬ হাজার চাকরিজীবীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ৫০ হাজার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১৪২টি সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে। তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে সারা দেশে। অপর খবরে বলা হয়, তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর আটকদের মধ্যে ৭৫০ জনের বেশি সেনা সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান তাকে অপমানজনক অশ্রদ্ধা দেখানোর অভিযোগে দায়ের মামলাগুলো ‘ঐক্যের’ অংশ হিসেবে তুলে নেবেন বলে ঘোষণা দেওয়ার মধ্যেই এই সেনা সদস্যের মুক্তি দেওয়া হলো। রাষ্ট্রায়ত্ত আনাদলুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৭৫৮ জন সেনা সদস্যের সাক্ষ্য নেওয়ার পর প্রসিকিউটরদের সুপারিশের ভিত্তিতে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তে এক বিচারকের সম্মতি রয়েছে। এ ছাড়া আরও ২৩১ জন সেনাকে হাজতে রাখা হয়েছে জানায় তারা। জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সেনাবাহিনীসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে কাজ করা ৬০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আটক, অপসারণ ও বরখাস্ত করা হয়। রয়টার্স বলছে, তুরস্কের সেনাবাহিনী সামরিক জোট ন্যাটোর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পর দেশটির জেনারেল-অ্যাডমিরালদের মধ্যে প্রায় ৪০ ভাগকে বরখাস্ত করা হয়। প্রায় এক হাজার ৭০০ সেনা সদস্যকে অসম্মানজনকভাবে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে দেশটি বৃহস্পতিবার ৯৯ জন কর্নেলকে জেনারেল ও অ্যাডমিরাল পদে পদোন্নতি দিয়েছে বলে জানায় তারা। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন