মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নে ‘নীরব’ কূটনীতি পাকিস্তানের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:১৮ পিএম | আপডেট : ৮:০১ পিএম, ৩ আগস্ট, ২০২০

ভারতের সাথে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের সম্পর্ক অবনতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে  পাকিস্তান ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইসলামাবাদ ও ঢাকার কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বস্তুত, সাম্প্রতিক কিছু কূটনৈতিক ঘটনা দীর্ঘ দিন ধরে জটিলতায় থাকা পাকিস্তান-বাংলাদেশ সমীকরণ সহজ করে দিতে পারে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চলতি মাসের প্রথম দিকে বিরল এক টেলিফোনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইসলামাবাদ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। -সাউথ এশিয়ান মনিটর, আরব নিউজ
 ফোনালাপের মাত্র কিছু দিন আগে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনার ইমরান আহমদ সিদ্দিকি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের মধ্যে একটি নীরব সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর আর কখনো স্বাভাবিক হয়নি। ওই যুদ্ধের মাধ্যমেই ভারতের সহায়তায় পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।

দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো অবনতি হয় ২০১৬ সালে। ওই সময় বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের জন্য জামায়াতে ইসলামীর বেশ কয়েকজন নেতার ফাঁসি কার্যকর করে। পাকিস্তান একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করে।তবে এখন উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা বলছেন, সম্পর্ক পুনঃবিন্যাসের সময় এখন। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র আয়েশা ফারুকি আরব নিউজকে বলেন, দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কিভাবে ইতিবাচক দিকে অগ্রসর হতে পারে সেজন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে টেকসই সংলাপ চাচ্ছি। আমরা একসাথে কাজ করতে চাই। আমরা বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক ও পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়ে আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে চাই। রাষ্ট্রদূত সিদ্দিকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সাথে তার বৈঠকের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছেন। তবে আরব নিউজকে তিনি বলেন, লক্ষ্য হলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ইতিবাচক দিকে এগিয়ে নেয়া।

পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাই কমিশনার-ডেজিগনেট মোহাম্মদ রুহুল আলম সিদ্দিকি বলেন, তরুণতর প্রজন্ম অর্থপূর্ণ সম্পর্কের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনিও বলেন, তিনি তার মেয়াদে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানে দায়িত্ব পালনের সময় আমার একমাত্র মিশন হবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যতটা সম্ভব ভালো করা।  তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে তার প্রধান দায়িত্ব হবে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা দূর করা। পাকিস্তান স্টেট ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানের রফতানি দাঁড়িয়েছে ৭৩৬ মিলিয়ন ডলার, আর পাকিস্তানে বাংলাদেশের রফতানি মাত্র ৪৪ মিলিয়ন ডলার। এই অঞ্চলে ভারত ও অন্য কয়েকটি দেশের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।

গত মাসে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, বিরোধপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চীনা সৈন্যদের সাথে হাতাহাতি লড়াইয়ে তাদের অন্তত ২০ সৈন্য মারা গেছে। ভারতের সাথে নেপালের সম্পর্কেও টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে। এখানেও সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। পাকিস্তানের সাথেও ভারতের সম্পর্ক খুবই উত্তেজনাকর অবস্থায় রয়েছে। ফারুকি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ভারতের সাথে চীনের, নেপালের ও বাংলাদেশের সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানের সাথে বিরোধ তো আছেই। এসব ঘটনা এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে ভারতকে কার্যকর অবস্থায় রাখবে না।

তবে আরব নিউজের এক ইমেইলের জবাবে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার বিপুল দেব শেখ হাসিনাকে ইমরান খানের টেলিফোন করা নিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বক্তব্যই তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও ঐতিহাসিক। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার টেকসই সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসলামাবাদকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্য প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দেলওয়ার হোসাইন বলেন, সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব এখন পাকিস্তানের। ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক হাই কমিশনার আবদুল বাসিত বলেন, এখন ইমরান খানের উচিত হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার টেলিফোনের ‘ফলো-আপ’ করা।
 
 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (17)
সুলতান আহমেদ ৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩৮ পিএম says : 2
দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে সম্পর্ক উন্নয়ন করা যেতে পারে
Total Reply(0)
আশরাফুল ইসলাম ৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩৯ পিএম says : 1
বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়া দরকার
Total Reply(0)
মিলন খন্দকার ৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩৯ পিএম says : 0
এটাও ভাই দেশের জন্যই ভালো হবে বলে আমি মনে করছি
Total Reply(0)
সাদ্দাম ৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:৪০ পিএম says : 2
এতে আবার দাদারাও নারাজ হতে পারে
Total Reply(0)
হাবিবুর রহমান ৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:৪২ পিএম says : 0
দেশের স্বার্থের জন্য সকলের সাথে সম্পর্ক করা যেতে পারে
Total Reply(0)
Md Jahirul Islam ৩ আগস্ট, ২০২০, ১:০৫ পিএম says : 1
আমার মনে হয় এটা ই সবচেয়ে ভাল এবং উপযুক্ত সময় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়া । দুই দেশের স্বার্থ ই যাতে সুরক্ষিত থাকে । কোন মতেই যাতে ভারতের মত না হয় । ভারত শুধু নিতে জানে , দিতে জানে না ।
Total Reply(0)
amirswapan ৩ আগস্ট, ২০২০, ২:২৭ পিএম says : 16
আগেক্ষমাচইতেহবে
Total Reply(0)
মোহাম্মদ বেলাল হোসেন ৩ আগস্ট, ২০২০, ৩:৫৩ পিএম says : 0
বাংলাদেশ পাকিস্তান সম্পর্ক এখন সময়ের দাবি।
Total Reply(0)
মিনহাজ ৩ আগস্ট, ২০২০, ৪:৫৬ পিএম says : 0
আশা করি বাংলাদেশ সরকারও এই সুযোগটা কাজে লাগাবে।
Total Reply(0)
Yamin ৩ আগস্ট, ২০২০, ৪:৫৬ পিএম says : 0
If Bangladesh agree with them it will good for us
Total Reply(0)
Jack Ali ৩ আগস্ট, ২০২০, ৫:০৮ পিএম says : 0
Muslim's are brother to each other so we muslim come together under on Banner of Islam.. then we might be able to spread peace around the world.
Total Reply(0)
এ এইচ. ভূইয়া ৩ আগস্ট, ২০২০, ৮:০৩ পিএম says : 7
৭১ সনের ঘটনার জন্য পাকিস্তান অফিসিয়াল দুঃখ প্রকাশ করলেই শেখ হাসিনার মন নরম হয়ে আসবে। শেখ হাসিনা অতি আবেগি নরম মনের মহিলা। অবস্যই বর্তমান জেনারেশনর যুব পাকিস্তানিদের আপন করে নিবে।
Total Reply(0)
Masud ৪ আগস্ট, ২০২০, ৪:০৭ এএম says : 3
No relation with Pakistan. We never fogot 1971.
Total Reply(0)
Md Zakaria ৪ আগস্ট, ২০২০, ১০:২৩ এএম says : 0
শত্রুতা বাদ দিয়ে সুসম্পর্কের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়া সময়ের দাবি।প্রতিবেশিদের হারে হারে চিনেছি।
Total Reply(0)
মোহাম্মদফাহাদ ৪ আগস্ট, ২০২০, ১০:৩১ এএম says : 3
পাকিস্থান যদি তাদের ৭১ এর ভুল স্বীকার করে আমাদের শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তাহলে সরকার সম্পর্ক উন্নয়নেে নজর দিতে পারে।
Total Reply(0)
Rashid ৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩০ পিএম says : 0
দেশ ও জনগণের স্বার্থে সম্পর্ক করা ভালো এতে কে খুশি হলো আর কে অখুশি হলো তা বিবেচ্য বিষয় নয়। আমার দেশ ও জনগণ আগে, পরে অন্য কথা।
Total Reply(0)
Md Islam ৯ আগস্ট, ২০২০, ৬:২১ এএম says : 0
বর্তমান মুক্তবাণিজ্যের এই পৃথিবীতে, প্রতিটি দেশই এগিয়ে যাওয়ার চিন্তায় মগ্ন আছে, ফলে নিজ দেশের কল্যাণ কামনা কে সামনে রেখে শত্রুতা কে পিছনে ফেলে মিত্রতা কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরাও যদি পাকিস্তানের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের সাথে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেই,তাহলে অচিরেই দেখবেন পাকিস্তান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সাথে যে অন্যায় আচরণ করেছিল , সেই ভুলের জন্য তারা দুঃখিত হবে ও ক্ষমা চেয়ে নেবে। তখন দুটি মুসলিম দেশের মধ্যে সম্পর্কের সীমাটা এতদূর চলে যাবে যে, ভারত ইচ্ছে করলেই বাংলাদেশের উপর আর জুলুম করতে পারবে না। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে যখন ভাতৃত্বের বন্ধন তৈরি হবে, তখন ব্যবসা-বাণিজ্য ও সংস্কৃতির আদান-প্রদান হবে। এই কারণে দুই দেশেই চরম উপকৃত হবে। তাই আমার মতে পাকিস্তানের বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়া টাকে বাংলাদেশের জন্য গ্রহণ করা উত্তম।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন