বিশ্বের মধ্যে প্রথম করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছে রাশিয়া। দেশটি জানিয়েছে, তাদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ ইতোমধ্যেই প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। আগস্টের শেষের দিকেই এই ভ্যাকসিন সাধারণের ব্যবহারের জন্য বাজারে ছাড়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত ১১ অগাস্ট করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুত বলে জানায় মস্কোর গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউট। সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য এই ভ্যাকসিনই প্রথম অনুমোদন পেয়েছে। এর আগে বলা হয়েছিল যে রাশিয়ার গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি এই ভ্যাকসিন বাজারে আসতে আসতে সেপ্টেম্বর মাস হয়ে যাবে এবং গণহারে এই ভ্যাকসিন প্রদানের কাজ শুরু হবে অক্টোবর মাসে। তবে সেই সময় এগিয়ে এবার অগস্টের শেষ বলা হয়েছে। রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে গোটা বিশ্বের বৈজ্ঞানিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
রাশিয়ায় তৈরি এই কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক তৃতীয় দফার পরীক্ষা ছাড়াই অনুমোদন পেয়েছে বলে অভিযোগ। তৃতীয় দফার পরীক্ষায় মানব শরীরের ওপরে ট্রায়াল চালানো হয়। অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এই ভ্যাকসিন প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ করেছে। মাত্র দু-মাসের মধ্যে যে ভাবে এই ভ্যাকসিনের যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ হয়েছে, তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণত কোনও নতুন ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শেষ হতে বেশ কয়েক মাস, অনেক সময় বছরও লেগে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকেও রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশের মতো কিছু শোনা যায়নি।
তবে, যাবতীয় সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়া এর আগেই জানায় যে, ইবোলা ও মার্সের মতো ভয়ংকর ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে তারা কোভিডের ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’ বানাতে সক্ষম হয়েছে। শনিবার এ কথা জানিয়েছেন মস্কোর গামালেয়া গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান আলেকজান্ডার গিন্সবুর্গ। তিনি বলেন, ‘তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবককে প্রতিষেধকের দু’টি করে ইঞ্জেকশন দেয়া হবে। তবে সে জন্য কাউকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে না। তারা বাড়ি থেকেই স্বাভাবিক ভাবে যাতায়াত করতে পারবেন।’
রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ বাজারে ছাড়া হবে। পশ্চিমা বিশ্ব রুশ ভ্যাকসিনকে নিরাপদ নয় বলে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তা-ও নাকচ করে দেন মুরাশকো। তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বীরাই এমন কথা বলছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, এই ভ্যাকসিন গ্রহণকারীরা কোনও সমস্যায় পড়ছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণে বিশেষ একটি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। সূত্র: ব্যাংকক পোস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন