গরু চোরাচালান সংশ্লিষ্টতায় এবার সিবিআইয়ের নজর পড়েছে কলকাতার বেশ কিছু রেস্তরাঁ ও কফি শপে। সেখানে বসেই পাচারের টাকা লেনদেনের পাশাপাশি পাচারের ছক তৈরি হত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসাররা।
সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁর সঙ্গে কয়েকটি কফি শপের নাম উঠে এসেছে সিবিআই তদন্তে। যেখানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল গরু পাচারের কিংপিন মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল হক, আনারুল শেখ ও লিংকম্যান মুহাম্মদ মোশতাকের। এছাড়া, উত্তরপ্রদেশের মানুষজনের যাতায়াত ছিল গরু পাচার ঘিরে। ৪ শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৭ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তার যোগাযোগের বহু তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। তাদের বেশ কিছু সম্পত্তি সিল করাও হয়েছে। এবার গরু পাচারের সাথে সংশ্লিষ্টদের গোপন যোগাযোগস্থল কলকাতার রেস্তরাঁ ও কফিশপের তথ্য তদন্তকারী দলের হাতে আসায় রেস্তরাঁ মালিক ও কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাবে সিবিআই। টাকার নম্বর বলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হাওলার টাকা বিনিময়ে এ পাচারের কাজ চলে জোরেশোরে। গরু পাচার চক্রের বিস্তৃতি ও প্রভাব পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও এর বাইরে এমনকি বিদেশেও সক্রিয় থাকায় বহু প্রভাবশালী এর সঙ্গে যুক্ত বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা।
এদিকে বিএসএফকর্তা সতীশ কুমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক গরু পাচার চক্রের মাথা এনামুল হকের যোগাযোগ আরও অনেক স্পষ্ট হচ্ছে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, সতীশ কুমারের মুর্শিদাবাদে একটি বাড়ি আছে, যেটি এনামুল বানিয়ে দিয়েছে। তার ছেলেকে চাকরিও দিয়েছিলেন এনামুল। সঙ্গে দামি গাড়ি উপহার। ফলে নির্বিঘেœই চলছিল গরু পাচার। কিন্তু সতীশকে উত্তরবঙ্গে বদলি করার পর থেকেই ধীরে ধীরে রাশ টানা শুরু হয় গরু পাচারের ওপর।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের আগে রীতিমতো কেঁচো খুঁড়তে কেউটের সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। জানা গেছে, গরু পাচারকারীদের সঙ্গে বিএসএফ-এর একাংশ অফিসার বা জওয়ানের জড়িত থাকার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। গরুর বদলে কাঁটাতার টপকে সীমান্তের অপর দিক থেকে আসে অস্ত্র। আর সেগুলো চলে যায় সন্ত্রাসবাদীদের হাতে। শুধু তাই নয়, রমরমিয়ে চলে হাওলা বা হুন্ডি ব্যবসা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তার প্রমাণও পেয়েছেন। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন